স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে থাকবে না পার্বত্য চট্টগ্রামও। পার্বত্যাঞ্চলকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। এই সরকারের আমলে পাহাড়ে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। অগ্রাধিকার দিয়ে পাহাড়ের মানুষকে এগিয়ে নিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটনসহ বিভিন্ন সেক্টরে আরো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পাহাড়ে বসবাসরত মানুষের মধ্যে বিভাজন ভুলে এই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির কুমিল্লাটিলা এলাকায় বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন ও সুবিধাভোগীদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে একসময় জটিল অবস্থার কারণে এখানকার মানুষ শান্তিতে ছিলো না। শেখ হাসিনার সরকার অত্র অঞ্চলে শান্তি স্থাপনের পাশাপাশি পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের এসব নানামুখী পদক্ষেপের কারণে পাহাড়ের মানুষের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি সরকার চিকিৎসা বিভাগের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলো। সেই বন্ধ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আওয়ামী লীগ সরকার চালু করেছে। বিভাজনকারীরা সকলের শত্রু;তাই পাহাড়ি-বাঙালি বিভাজন না করে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলেই দেশ এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরনার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনের এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: হেলাল উদ্দীন আহম্মেদ, খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ফয়জুর রহমান, পৌরসভার মেয়র মো: রফিকুল আলমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু পৌর আবাসন প্রকল্পে ঠাঁই পাওয়া ৩৩ পরিবারের হাতে ঘরের চাবি ও কম্বল তুলে দেন এবং নির্মিত আবাসন প্রকল্প ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে পৌরসভার চলমান ও বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পৌর মেয়রের ভূয়সী প্রশংসা করেন মো. তাজুল ইসলাম। এসময় উন্নয়নের ধারায় খাগড়াছড়িকে আরো এগিয়ে নিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

এর আগে সকালে মন্ত্রী খাগড়াছড়ির ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টারে অবতরণ করলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, পার্বত্য এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক এবং ওপেন ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নে তৃতীয় নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নতিকরনে (সেক্টর) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে খাগড়াছড়ি পৌরসভা। ২০১৭ সালের শেষের দিকে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হয়।

এই প্রকল্পের আওতায় নির্মিত দৃষ্টিনন্দন স্বপ্নের বাড়ির চাবি যারা পেয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছে, ভূমিহীন ১১, বিধবা ৮, স্বামী পরিত্যক্তা ৪, প্রতিবন্ধী ৭ এবং ৩ অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩৩টি পরিবার। প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা।

পিডিএসও/তাজ