বান্দরবান প্রতিনিধি
মিয়ানমার থেকে এবার আসছে খুমি ও রাখাইন
রুমা সীমান্ত দিয়ে ঢুকেছে ১২৪
মিয়ানমার থেকে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ার পর এবার সে দেশ থেকে বাংলাদেশে আসছে খুমি ও রাখাইন উপজাতির মানুষ। গত দুদিন পাহাড়ে অবস্থানের পর বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছেন তারা। গত সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে রুমা সীমান্তের চৈক্ষ্যংপাড়া দিয়ে ওই উপজাতির ১২৪ সদস্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বলে স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল আরাকান আর্মি (এএ) এবং সে দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে বিরাজমান সংঘর্ষে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে আসছে। এই শরণার্থী দলের সদস্যরা রোহিঙ্গা বা মুসলিম নয়, তারা খুমি ও রাখাইন উপজাতিভুক্ত, ধর্মে খ্রিস্টান।
তবে সোমবার (রাত ১০ পর্যন্ত) প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত দুদিন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ৭১ নম্বর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি অবস্থানের পর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিয়ানমারের চিন স্টেটের প্লাটোয়া জেলার কান্তিলান পাড়ার ১২ খুমি পরিবারের ৪৮ জন, খামংওয়াং পাড়ার রাখাইন ২৩ পরিবারের ৭৬ জনসহ মোট ১২৪ জন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে। তাদের মধ্যে শিশু রয়েছে ৫০ জনের বেশি। এ ছাড়া বম সম্প্রদায়ের প্রায় ১৫টি পরিবার রুমা সীমান্ত দিয়ে ঢুকে নিজ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর এই শরণার্থীদের খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। ঘটনাস্থল অত্যন্ত দুর্গম। ফলে অনেকটা সহজেই তারা এই সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতে পেরেছে। এদিকে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সদস্যদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকায় সীমান্তে আরো মিয়ানমারের উপজাতীয় শরণর্থীরা প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেছেন, সীমান্তের জিরোলাইনের কাছে ১২টি খুমি পরিবারের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৪৮ জন এবং ২৩টি রাখাইন পরিবারের ৭৬ জন সদস্য অবস্থান করছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা যেকোনো সময় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।
তবে জিরো লাইনে থাকা শরণার্থীরা কোনোভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে, যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য সীমান্ত এলাকা সতর্কতায় রাখা হয়েছে বলে জানান বান্দরবান সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জহিরুল ইসলাম।
পিডিএসও/হেলাল