ম্যাক্সসহ ৩ হাসপাতালে অভিযান, চিকিৎসা সেবা বন্ধ চট্টগ্রামে
ম্যাক্সসহ তিন হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল মালিকরা।
এর আগে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেহেদীবাগ এলাকার ম্যাক্স হাসপাতাল, ওআর নিজাম রোডের মেট্রোপলিটন হাসপাতাল আর প্রবর্তক মোড়ের সিএসসিআর হাসপাতালে একযোগে এ অভিযান শুরু হয়। অভিযানের সময় ম্যাক্স হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানা গেছে।
এ অভিযান পরিচালনার পর থেকে চিকিৎসা সেবা বন্ধের ঘোষণা দেন বেসরকারি মালিকরা। আর এতে সম্মতি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নেতারা।
ম্যাক্স হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. দেওয়ান মাহমুদ মেহেদি হাসান।
এসময় সারোয়ার আলম বলেন, একজন নমুনা সংগ্রহ করছে, অন্যজন পরীক্ষা করছে আবার অ্যানালাইসিস করা হচ্ছে অন্য জায়গায়। এভাবে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে ম্যাক্সের ল্যাবে। এগুলো আসলেই পরীক্ষা হয়েছে কি না সেটাই তো নিশ্চিত না।
তিনি আরও বলেন, বায়োকেমিস্ট্রি ল্যাবে এইচএসসি পাস লোকজন চাকরি করছে। এখানে মিনিমাম স্নাতক ডিগ্রিধারী বা বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্নদের কাজ করার কথা। একটা হাসপাতাল চালাতে হলে অবশ্যই নমুনা পরীক্ষার নিজস্ব ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেটা তাদের নেই। গলাব্যথা নিয়ে গেলো ২৮ জুন বিকেলে নগরীর মেহেদীবাগের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দৈনিক সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী শিশুকন্যা রাইফা পর দিন শুক্রবার রাতে মারা যায়।
অভিযোগ ওঠে- কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটে। ‘রাইফাকে হত্যা করা হয়েছে’-এ অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সংগঠনগুলো আন্দোলন এবং দায়ীদের বিচার দাবি করা হয়।
পরে ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে। সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়। এতে বলা হয়, চিকিৎসক ও ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে শিশু রাইফার মৃত্যু হয়েছে।
রাইফার মৃত্যুর সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাইফার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রাইফার বাবা-মা যে অভিযোগ করেছিলেন, তার সত্যতা পাওয়া গেছে।
এতে আরও বলা হয়, রাইফা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তার রোগ নির্ণয় ও ওষুধ প্রয়োগ যথাযথ থাকলেও সে যখন খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলার দক্ষতা ও জ্ঞান তাদের ছিল না।
পিডিএসও/রিহাব