নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
পবিত্র মাহে রমজানকে সামনে রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং যাত্রী সাধারনের চলাচলে ভোগান্তি লাগবের অভিপ্রায়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে মহাসড়কের দুপাশে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। শনিবার (২৬ মে) সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রিফাত ফেরদৌস ও প্রত্যয় হাসানের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ (সওজ) ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথভাবে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় মহাসড়কের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দু’পাশে গড়ে উঠা ৫/৬ শতাধিক স্থাপনা বুল্ডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তবে অভিযানের পর আবার যেন অবৈধ দখলদাররা ফুটপাত দখল করতে না পারে সে জন্য জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলেও জানা গেছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগ (সওজ), ভিটিকান্দি সড়ক উপ-বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মতিয়ার রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল আজিজ, উপ-পরিদর্শক রেজাউল করিম ও মোজাম্মেল হকসহ জেলা পুলিশ প্রশাসনের অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স ও আনসার সদস্যগন প্রমুখ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে দুপাশের সরকারী জমি দখল করে একশ্রেনীর প্রভাবশালী ব্যাক্তি, জনপ্রতিনিধি, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্র বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে তুলে দীর্ঘদিন যাবৎ ভাড়া বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল। এসব দোকান থেকে এককালিন ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা অগ্রীম নিয়ে দৈনিক ২’শ থেকে ৩’শ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করে আসছে। এসব অবৈধ দোকান থেকে ভাড়া বাণিজ্যের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। আর তাদের দৌরাত্বের কারনে বলিরপাঠা হতে হয় শিমরাইল মোড়ের হত দরিদ্র ফুটপাত ব্যবসায়ীদের।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রত্যয় হাসান জানায়, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শিমরাইল মোড়ের বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চালাচ্ছি। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচল যেন স্বাভাবিক থাকে, ঈদ উপলক্ষে মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নিরাপদে বাড়ী যেতে পারে এবং মানুষের চলাফেরা যেন সুষ্ঠ ও স্বাভাবিক থাকে সেজন্য শিমরাইল মোড়ের বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা, যেগুলো যান চলাচলে বাধাগ্রস্থ করছে আমরা সেগুলোকে উচ্ছেদ করে যান চলাচল উন্মুক্ত করছি। পুলিশ প্রশাসন এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা উচ্ছেদ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছেন। এ অভিযানে আমরা দুজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্বে রয়েছি এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তরা উপস্থিত রয়েছেন। এ পর্যন্ত আমরা মহাসড়কের দুপাশের অধিকাংশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সক্ষম হয়েছি এবং যেগুলো বাকি রয়েছে তা আজকের দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত আমরা ৩/৪ শতাধিক বিভিন্ন ধরনের অবৈধ দোকানপাট যেগুলো মহাসড়কের জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে সেগুলো উচ্ছেদ করে গুড়িয়ে দিয়েছি। অতীতে উচ্ছেদ অভিযানের পর পরই অবৈধ দখলদাররা পূর্বের ন্যায় দোকান বসিয়ে ফেলে এমন অভিযোগে তিনি বলেন, আমরা জানি যে, উচ্ছেদ অভিযানের পর পরই অবৈধ দখলদাররা আবারো দখল করে দোকানপাট বসায়। সেদিকে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তারা যাতে আবারো দোকানপাট বসাতে না পারে সেজন্য তাদের অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়ক স্বাভাবিক থাকবে। মহাসড়কের প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পিডিএসও/রানা