নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ জুন, ২০১৭

ঈদ কেনাকাটায় বিদেশে যাচ্ছে ১২০০ কোটি টাকা

ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা করতে বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেড়লাখ মানুষ ভারতে যান। বিশেষ করে কলকাতায়। এসময় শহরটিতে বাংলাদেশি ক্রেতাদের লক্ষ্য করে নতুন ডিজাইনের পোশাক, জুতা, গয়না বাজারে আসে। ঈদ ছাড়াও সারা বছরই বাংলাদেশের ক্রেতারা ভারতের বাজারে কেনাকাটা করেন। ব্যবসায়ী নেতাদের হিসেবে, শুধু ঈদ উপলক্ষে তারা খরচ করেন প্রায় ১২শ কোটি টাকার বেশি। প্রত্যেক ক্রেতা গড়ে এক হাজার ডলারের কম খরচ করেন না। দুই ঈদের হিসাব করলে অংকটি আরো বড়। বিষয়টি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে গিয়ে শপিং করলে লাভ কি? এ নিয়ে বিভিন্ন বয়সী ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তুলনামূলকভাবে কলকাতায় পোশাকসহ সব পণ্যের দাম কম। মান এবং ডিজাইন ভালো। বাংলাদেশেও ভালো ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যায়। তবে ক্রেতাদের মতে, আগে ভারতীয় ডিজাইনের পোষাক বাজারে আসে, এরপর ওইসব ডিজাইন এখানে অনুকরন করা হয়। অন্যদেশে কেনাকাটা করতে যাওয়া তখনই বন্ধ হবে, যখন দেশেই মানসম্মত পণ্য পাওয়া যাবে প্রতিযোগিতামূলক দামে।

তবে এক্ষেত্রে দেশের অনেকে বিক্রেতাই উল্টো অভিযোগ করেন। মিরপুর বেনারসি পল্লীর এক বিক্রেতা জানান, ভারত থেকে আনা বাহারি শাড়ি কম টাকায় ‘ঢাকাই জামদানি’ বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া মিরপুরী বেনারসি কাতান, জামদানি, রাজশাহী সিল্ক, টাঙ্গাইল শাড়ির পাশাপাশি ভারত থেকে আমদানি করা বেনারসি, জর্জেট, চেন্নাই কাতান, টসরসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়। রয়েছে ভারতীয় থান কাপড়ের বাজারও।

একদিকে ভারতীয় পোশাকে বাংলাদেশের ঈদের বাজার ছয়লাব। হরেক নামের ও দামের ভারতীয় পোশাক এ দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে ভারতে গিয়ে শপিংয়ের এ মনোভাব কেবল উচ্চবিত্তে নয়, মধ্যবিত্তকেও গ্রাস করেছে। কিন্তু যারা যাচ্ছেন তারা নিয়ম মেনেই যাচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত বৈধভাবে নেয়া যায়। কেনাকাটার ক্ষেত্রে যে নীতিমালা রয়েছে তাও মানছেন তারা। এ ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করেন ক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। দেশীয় পণ্যের মান বাড়াতে হবে এবং প্রতিযোগিতামূলক সহনীয় দামে পণ্য বিক্রি করতে হবে। তা না হলে ভারতমূখিতা কমানো যাবে না।

এবার ঈদ সামনে রেখে ঢাকায় ১২ দিনের ভিসা ক্যাম্প করে ভারতীয় হাই কমিশন। এর বাইরে দেশের অন্যান্য জায়গায় ১১টি ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র থেকেও ভিসা দেওয়া হয়। কলকাতার একটি সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি সেখানে কেনাকাটা করতে গিয়েছে। কলকাতার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা মীর্জা গালিব স্ট্রিট, মল্লিকবাজার, বেলগাছিয়া, নিউমার্কেট, চিৎপুর, টালিগঞ্জ, এন্টালি, আনোয়ার শাহ রোড, রাজাবাজার, পার্ক সার্কাস, মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর, পার্ক স্ট্রিট, চিৎপুরের জাকারিয়া স্ট্রিট, ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদ চত্বর বাংলাদেশি ক্রেতার ভীড়ে উৎসবমূখর।

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিধিমালা অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে ভারতে গিয়ে তিনবার কেনাকাটার পর চতুর্থবারে কিনে আনা পণ্যের ওপর কর দিতে হবে। এতে মূলত বিপাকে পড়বেন সেই সব ব্যবসায়ী, যাঁরা ভারতে গিয়ে ব্যাগভর্তি পণ্য কিনে এনে দেশে বিক্রি করেন। ব্যাগেজ রুলের আওতায় স্থলবন্দর দিয়ে আগত একজন যাত্রী বিদেশে অবস্থানের সময় নির্বিশেষে ৪০০ মার্কিন ডলার মূল্যের ব্যাগেজ সব ধরনের শুল্ক ও কর পরিশোধ ব্যতিরেকে আমদানি করতে পারতেন। এখানে নতুন শর্ত যোগ করে এনবিআর বলেছে, এক পঞ্জিকা বছরে একজন যাত্রী এ সুবিধা তিনবারের বেশি পাবেন না। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক মানুষ বারবার ভারতে গিয়ে পণ্য কিনে আনেন, সেগুলো ঢাকার বিভিন্ন বিপণিবিতানে সরবরাহ করেন এবং ই-কমার্স সাইটগুলোতে বিক্রি করেন। এখন এ সুযোগ সীমিত হওয়ায় বাড়তে পারে চোরাচালান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist