নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পাওনা আদায়ে গ্রামীণ-রবিকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে

গ্রামীণফোন ও রবির বকেয়া পাওনা আদায়ে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে এসে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে সরকার। এ ক্ষেত্রে অপারেটর দুটিও মামলা প্রত্যাহার করে নেবে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া পাওনা আদায়ের বিষয়টির সমাধান হবে।

গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক, এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি এবং রবির সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সব ধরনের সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমে নিতে চাই। গ্রামীণফোন এখানে ব্যবসা করুক। আমাদের পাওনা বুঝিয়ে দিলেই হবে। তাহলে আমরা তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করব। এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে রাজস্ব হারাব। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব এবং গ্রামীণফোন তাদের প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা করবে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এটির সমাধান হবে। তাদের পাওনা-সংক্রান্ত মামলা প্রত্যাহার হবে। সুদসহ ৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে গ্রামীণফোনের কাছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা কীভাবে করব এ মুহূর্তে বলব না। এখানে অনেক সুদ রয়েছে। তাদের পক্ষ থেকেও আপত্তি রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে টাকা আদায় করা হবে। তারাও মামলা প্রত্যাহার করবে। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। নো ফারদার আরগুমেন্ট।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২২ বছরের পথচলায় গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য অপারেটরের কাছে এনবিআর ও বিটিআরসির অনেক পাওনা রয়েছে। তারা এটি আলোচনার ভিত্তিতে পরিশোধ করবে। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসা করতে বাধা দিতে চাই না। কোনো পক্ষকে হারিয়ে দিতে চাই না। আমরা নিজেরাও হারতে চাই না। অপারেটরদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমরা আশা করি, এটিও নিষ্পত্তি করতে পারব।

গ্রামীলণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ যে, আমাদের একত্রিত করে এটির সমাধান খোঁজা হচ্ছে। কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে গেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এখন আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান হবে।

এর আগে, প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পাওনা আদায়ের তৃতীয় ধাপ হিসেবে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে বিটিআরসি। তারও আগে, বকেয়া পরিশোধ না করায় গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবি আজিয়াটার (রবি) ব্যান্ডউইথ সক্ষমতাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত অপারেটর দুটিকে কোনো এনওসি (নতুন সেবা প্রদান) করার সিদ্ধান্তও আসে। সর্বশেষ ধাপ হিসেবে গ্রামীণফোন ও রবিতে প্রশাসক বসানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল বিটিআরসি।

গ্রামীণ ও রবির বকেয়া আদায়ের বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিং ডেকেছিল বিটিআরসি, যা দুপুরে তাদের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা করতে চায় সরকার। আর আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে বিটিআরসির নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে আসারও ইঙ্গিত মিলেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close