সাহারুল হক সাচ্চু, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ)

  ২১ আগস্ট, ২০১৯

গ্রামাঞ্চলে ভবন নির্মাণে অনুমতি নেন না কেউ

পাকা ভবন নির্মাণ করে গ্রামাঞ্চলে বসতি স্থাপন বাড়ছে। এর মধ্যে আছে পুরোপুরি ঢালাইয়ে ছাদের পাকা ভবন, ইটের গাঁথুনির উপর টিনের ছাউনি। পৌরসভার বাইরে গ্রামের এসব বসত ঘর নির্মাণেও অনুমোদন নেওয়া সরকারি বিধান রয়েছে। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই একের পর এক পাকা সব বসতবাড়ি নির্মাণ হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় গত দেড় বছরে নির্মাণ হয়েছে কয়েকটা পাকা বসত ভবন। কিন্তু বছর শেষে সেখানে অনুমোদন নেওয়ার সংখ্যা মাত্র ৮টি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পৌরসভা এলাকার বাইরে ইউনিয়নগুলোর গ্রাম পর্যায়ে বসত ঘর কিংবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য পাকা স্থাপনা ভবন নির্মানে অনুমোদন নেওয়ার বিধান রয়েছে। সরকারিভাবে এ নির্দেশনা ও বিধিবিধান জারি করা আছে। ছাদ ঢালাইয়ে পাকা ভবন এবং ইটের টিন সেডের ভবন নির্মানের আগেও উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এগারো সদস্যের বসতবাড়ীর প্লান অনুমোদন বিষয়ক একটি মূল কমিটি রয়েছে। এ কমিটিতে কমিটির সদস্য উপজেলা প্রকৌশলীও আছেন। ইউপি চেয়ারম্যানদের যুক্ত রাখা হয়েছে কমিটিতে।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কেউ নতুন পাকা স্থাপনার বসত ঘর কিংবা দোকানঘর গড়তে চাইলে প্রস্তাবিত ভবনের প্লানসহ লিখিত আবেদন উপজেলা প্রশাসন বরাবরে দাখিল করতে হবে। এর সঙ্গে সরকারের নির্ধারিত ফি কোষাগারে জমা দিতে হবে। এ অনুযায়ি পৌরসভার পার্শ্ববর্তী দূর্গানগর, সদর উল্লাপাড়া, হাটিকুমরুল ইউনিয়নের জন্য প্রতিটি আবেদনের সঙ্গে ২ হাজার টাকা করে ফি নির্ধারণ আছে। বাকী ইউনিয়নগুলোতে কিছুটা কম টাকা নির্ধারিত আছে। গত প্রায় দেড় বছর হলো পুরোপুরি বিধান জারি আছে।

এ সময়ের মধ্যে গোটা উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায় থেকে আটটি আবেদন ও অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩১ জুলাই দূর্গানগর ইউনিয়নের মরিচা গ্রামের মো. মিজানুর রহমান নতুন বসতঘর নির্মাণে বিধি মোতাবেক আবেদন ও অনুমোদন নিয়েছেন।

উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পর্যায় গ্রামগুলোতে গত এক বছরে বহুসংখ্যক পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে বসতঘর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণাধীন আছে নতুন আরো ভবন। এর মধ্যে হাটিকুমরুল, দূর্গানগর, মোহনপুর, উল্লাপাড়া, সলংগা ইউনিয়নে বেশি সংখ্যক এমন স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে। উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নে নাগরৌহা গ্রামে গত ছয় মাসের কমপক্ষে ২০টি ইটের গাঁথুনি বসত ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাণাধীন আছে আরো কয়েকটি ভবন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এরা কেউ ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন ও অনুমোদন নেননি। গ্রাম পর্যায়ে নতুন বসত ঘর নির্মাণে সরকারি অনুমোদন নিতে হয় তা অনেকে জানেনই না। বিভিন্ন ইউনিয়নে নতুন বসতবাড়ী নির্মাণকারীরা জানান, তারা কেউ অনুমোদন নেয়নি। ছোট বাখুয়া গ্রামের মো. গফুর আলী ও মোজাহার আলী জানান, তাদের জানা থাকলে অবশ্যই অনুমোদনের জন্য আবেদন করতেন।

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম জানান, একটি পাকা স্থাপনা প্লান মাফিক নির্মাণ করতে হয়। সেখানে গ্রাম পর্যায়ে প্লান ছাড়া ও অনুমোদন না নিয়েই সব স্থাপনা হচ্ছে। এতে দূর্ঘটনার ঝুঁকি থাকছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুজ্জামান জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে পাকা স্থাপনার বসত ভবন কিংবা বাণিজ্যিক ভবন নির্মানে উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদন নেওয়ার বিধি রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে বিষয়টি অবগত এবং তাদের ভূমিকা রাখার বিষয় লিখিতভাবে জানানো হচ্ছে। অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মানের বিষয়টি মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে তদারকি করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close