দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ

  ১৯ নভেম্বর, ২০১৮

ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পদ্মবিলা এলাকায় মধুমতি নদীর বিল রুট ক্যানেলে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করে সফল হয়ে উঠেছেন অনেক চাষী। ইতোমধ্যে এ পদ্ধতিকে আরো সম্প্রসারন করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন ওই এলাকার বেকার যুবকরা। লাভ জনক হওয়ায় নতুন এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন মৎস্যজীবী ও শিক্ষিত বেকার যুব সম্প্রদায়।

উলপুর ইউনিয়নের পদ্মবিলা ও মাদারীপুর বিল রুট ক্যানেলে এলাকায় মূল নদীর বাঁকে খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে আসছেন তন্ময় ঠাকুর। এ নদী দিয়ে মালবাহী নৌযান চলাচল করলেও মাছ চাষে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। মাদারীপুর বিল রুট ক্যানেলের পূর্ব পার্শে বড় বড় খাঁচায় করে চলছে মাছের চাষ। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে এখানে ভাসোমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেন তন্ময় ঠাকুর। এখন তার অধীনে বেশ কিছু লোক কাজ করছে। পদ্মবিলা এলাকার বাসিন্দা নাজমুল সিকদার বলেন, তন্ময় ঠাকুর ২০১৪ সাল থেকে উলপুর ইউনিয়নের পদ্মবিলা এলাকায় মাদারীপুর বিল রুট ক্যানেলে খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেন। তবে তার এই ধারনা তিনি মনের মধ্যে পুষতে থাকেন ১৯৯৮ সাল থেকে। মাছ চাষের প্রতি তন্ময় ঠাকুরের শখ ও আগ্রহ নিজের পুকুরে শুরু করেন মাছ চাষ এরপর তিনি ভাবলেন পুকুরের বিকল্প কি ভাবে মাছ চাষ করা যায়। নিজের ভাবনা বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে তিনি যান চাঁদপুরে। সেখান থেকে এই পদ্ধতির প্রথম ধারনা নিয়ে আসেন। এরপর ঢাকা যাওয়ার পথে দেখতে পান আড়িয়াল খাঁ নদীতে খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে। সেখান থেকে তিনি পরামর্শ নেন। পরে জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে শুরু করেন। তন্ময় ঠাকুরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রথমে বাঁশ ও জাল দিয়ে বড় বড় খাঁচা তৈরি করতে হয়। খাঁচা পানিতে ভাষিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন হয় মজবুত প্লাস্টিকের ড্রামের। অনেকে আবার বেশি সময় স্থায়ী রাখার জন্য খাঁচা তৈরিতে লোহার পাইপও ব্যবহার করছেন। একেকটি খাঁচার দৈর্ঘ্য ২০ফুট ও প্রস্থ ১০ ফুট এবং গভীরতা সাড়ে ৫ থেকে ৬ ফুট, একটি সারিতে ৭৫টি খাঁচা রয়েছে। একেকটি খাঁচা তৈরীতে প্রথম বছর ব্যয় হয় প্রায় ১৮-২০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় বছর থেকে জাল পরিবর্তন, বাঁশ পরিবর্তন এসব মিলে খাঁচা প্রতিখরচ হয় ২ হাজার টাকা। খাঁচা পদ্ধতিতে সেই সকল মাছ চাষ করা হয় না, যে গুলো সাধারনত লাফিয়ে যেতে পারে। যেমন, শোলমাছ, কার্প জাতীয় মাছ। তবে পাঙ্গাশ, সরপুঁটি, তেলাপিয়া, মাগুর, কালিবাউশ মাছ বেশি চাষ হয়ে থাকে।

সানপুকুরিয়া এলাকার গৌতম রায় বলেন, আমরা এই বর্ষা মৌসুমে বিলে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য খাঁচা তৈরি করছি। এ পদ্ধতিতে লাভবান হওয়া সম্ভব, তাছাড়া জমির প্রয়োজন হয় না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষনিক চেষ্টা করি এ ধরনের মৎস্য চাষে উদ্বুদ্ধ করতে, যাতে করে বেকার সমস্য দূর করা যায়। তাছাড়াও সরকার থেকে মাছের পোনা ও খাবার কেনার জন্য লোনও দেওয়া হয়।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close