প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৪ আগস্ট, ২০১৮

জমে উঠছে জেলার পশু হাট

দেশি পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা পশুর চাহিদা বেশি

ঈদের সপ্তাহখানেক বাকি থাকলেও জমে উঠছে দেশের বিভিন্ন জেলার পশুর হাট। নড়াইলে এ বছর ২৪ হাজার পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৩০ হাজার দেশি ও মিশ্রজাতের গবাদি পশু প্রস্তুত করেছে কৃষক ও খামারিরা। পশু মোটাতাজাকরণে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন হবিগঞ্জের খামারিরা। এবার জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও পশু সরবরাহ করা হতে পারবে বলে আশা করছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। এদিকে বগুনার আমতলী ও বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় জমতে শুরু করেছে পশুর হাটগুলো। আমতলীতে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বসছে গাজীপুর পুশুর হাট। সাধারণত সপ্তাহে বুধবার ও শুক্রবার দুদিন হাট বসে। অন্যদিকে আদমদীঘি উপজেলার উপজেলার বড় পশুর হাটগুলোর মধ্যে সান্তাহার রাধাকান্ত হাট, আদমদীঘির হাট, নশরতপুর হাট ও দুপচাঁচিয়ার ধাপের হাট আগাম কোরবানির পশু আসায় জমজমাট হয়ে উঠেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরÑ

নড়াইল প্রতিনিধি জানান, এ বছর ঈদুল আজহা সামনে রেখে চাহিদার চেয়ে ছয় হাজার গবাদি পশু বেশি প্রস্তুত আছে নড়াইলে। দেশীয় পদ্ধতিতে পশু মোটাতাজাকরণের জন্য জেলার গরুর চাহিদা বাড়ছে । জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নড়াইলে তালিকাভুক্ত খামারের সংখ্যা রয়েছে চার হাজার ৮৬৩টি। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এসব খামারে ২০ হাজার ১৬১টি গরু এবং ৯ হাজার ৭৯টি ছাগল প্রস্তুত করা হলেও চাহিদা রয়েছে ২৪ হাজার গবাদি পশু (১৭ হাজার গরু ও ৭ হাজার ছাগল)। জেলার তিনটি উপজেলায় মাইজপাড়া, মাদ্রাসা, লোহাগড়া, শিয়েরবরসহ ১১টি হাটে এসব পশু কেনা-বেচা হবে।

বিভিন্ন জেলার বেপারিরা এসে এসব গবাদি পশু ক্রয় করে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রয় করে থাকে। বর্তমানে এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে জেলার প্রায় ৩৫ হাজার কৃষক, খামারি ও বেপারি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মারুফ হাসান প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, কয়েক বছর ভারতীয় গরু নড়াইলে তেমন না আসায় অনেক কৃষক ও বেকার যুবক গবাদি পশু মোটাতাজাকরণের দিকে ঝুঁকেছে। সরকারিভাবে তাদের ট্রেনিং, পরামর্শ, খোঁজ-খবর নেওয়া এবং কিছু ওষুধ ফ্রি দিয়ে থাকি। আশা করছি এ বছর জেলার খামারি ও কৃষকরা লাভবান হবেন।

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, নিরাপদ মাংস নিশ্চিত করতে কোনো ধরনের নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ও ইনজেকশনের পরিবর্তে দেশীয় প্রযুক্তিতে পশু মোটাতাজাকরণের করছেন জেলার খামারিরা।

প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র ও অনুসন্ধানে জেলার ৯টি উপজেলায় ৭৫টি গরুর খামার গড়ে উঠেছে। খামারীরা বলছেন, এখনো বাজারে গরুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এ বছর ভারত থেকে গরু না আসলে খামারিরা লাভবান হবেন। অন্যথায় ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।

হবিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. এ জেড এম ওয়াহিদুল আলম বলেন, কোনো খামারি যেন ক্ষতিকারক ইনজেকশনের মাধ্যমে পশু হৃষ্টপুষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কোরবানি পশুর বাজার এখনো পুরোপুরি জমে ওঠেনি। বাজার জমে উঠলে খামারিরা ন্যায্য দাম পাবেন। তবে দেশের বাইরে থেকে কোনো পশু আমদানি হওয়ার সম্ভবনা নেই। যদি আসে সে ক্ষেত্রে দাম কমার সম্ভবনা আছে এবং কৃষকরা লোকসানে পড়বেন।

বরগুনার আমতলী প্রতিনিধি জানান, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহত্তম উপজেলা আমতলীতে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। উপজেলার গাজীপুরে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বসেছে পশুর হাট। এর অধিকাংশ জায়গায় শামিয়ানা টানিয়ে দেশি-বিদেশি গরু সারিবদ্ধ করে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আবদুর রব নামের এক ক্রেতা জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর গরুর দাম কম। তবে দেশি গরুর চাহিদা বেশি। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের কড়া নজর রয়েছে।

বগুড়ার আদমদীঘি প্রতিনিধি জানান, উপজেলার বড় পশুর হাটগুলোর মধ্যে শনিবার-মঙ্গলবার সান্তাহার রাধাকান্ত হাট ও আদমদীঘির হাট, শুক্রবার-সোমবার নশরতপুর হাট এবং বৃহস্পতিবারে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার ধাপের হাটে আগাম কোরবানির পশু আসায় জমজমাট হয়ে উঠেছে।

গত শনিবার উপজেলার সান্তাহার রাধাকান্ত হাটে একটি গরুর দাম সর্বোচ্চ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে আগামী সপ্তাহে হাটে গরুর আমদানি বেড়ে যাবে। হাটগুলোতে এখন পর্যন্ত ভারতীয় গরুর আমদানি চোখে পরার মতো নয় বলে জানান গরু ব্যবসায়ীরা।

সান্তাহার রাধাকান্ত হাট কর্তৃপক্ষ নুর ইসলাম জানান, স্থানীয় খামারের বা বাড়িতে পোষা গরুই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তবে পশুর আমদানির ওপর দামের নির্ভর করলেও এ বছর সবধরনের পশুর দাম তুলনামূলক অনেক কম হবে বলে মনে করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মুসা মিয়া জানান, ক্রেতাদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close