ক্রীড়া ডেস্ক
সুখের সংসারে অসুখ!
পিএসজি ২ : ০ লিঁও
পরশু ফ্রেঞ্চ লিগে অলিম্পিক লিঁওকে ২-০ গোলে হারিয়ে টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। গোল পাননি পাননি নেইমার, এমবাপ্পে, কাভানিদের কেউ। তাহলে কে করেছে ম্যাচের দুটো গোল। মজার ব্যাপার হলো পিএসজির কেউ গোল না করলেও তাতে জয় আটকায়নি প্যারিসের ক্লাবটির। পিএসজিকে আত্মঘাতী দুই গোল উপহার দিয়েছে লিঁও। কিন্তু আত্মঘাতী ও ম্যাচের ফল ছাপিয়ে পাদ প্রদীপে উঠে আসল পেনাল্টি নিয়ে নেইমার-কাভানি বিবাদ। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এটা নিয়ে কথা বলতে হলো পিএসজি কোচ উনাই এমরিকেও।
দুই ফরওয়ার্ডের মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিএসজি কোচ অবশ্য কূটনৈতিক উত্তর দিলেন। বলেছেন, ‘গুটিকয়েক খেলোয়াড়ই পেনাল্টি নেবেন। এদের একজন কাভানি, অন্যজন নেইমার। মাঠে পেনাল্টি নেওয়ার ব্যাপারে একটা সাধারণ বোঝাপড়া থাকতেই হয়। নেইমার আর কাভানিই এটা ঠিক করে নিক, দুজনই তো গোল করতে পারে।’
নেইমার-কাভানি রসায়ন ভালোই জমে উঠেছে মৌসুমের শুরু থেকে। লিঁও ম্যাচেও ভালোই আক্রমণের পসরা সাজিয়েছিল পিএসজি। কিন্তু সুখের সংসারে হঠাৎ অসুখ বাঁধল। শুরু হলো বিবাদ। সেটার যেন পুণরাবৃত্তি না হয় সেটার হুঁসিয়ারি দিয়ে রাখলেন পিএসজি কোচ, ‘যদি কোনো সমঝোতা না হয়, তখন আমি ঠিক করব, কে পেনাল্টি নেবে।’
ম্যাচের বয়স তখনো এক ঘণ্টা হয়নি। কিন্তু বিবাদ শুরু যায় পিএসজির মধ্যে। ৫৭ মিনিটে লিঁওর ডি-বক্সের সামনে ফ্রি-কিক পেয়েছিল পিএসজি। শট নিতে এগিয়ে কাভানি এগিয়ে আসলেও তার কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে নেইমারকে দেন দ্যানি আলভেজ। শটাও দারুণ নিয়েছিলেন নেইমার। ডান পাশে ঝাঁপ দিয়ে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারকে গোলবঞ্চিত করেন লিঁও গোল পোস্টের অতন্দ্র প্রহরী লোপেস।
খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্বটা থেমে থাকেনি ওখানে। পরে সেটা আরো প্রকট আকার ধারণ করল। ডান প্রান্তে ফ্রি কিক পেয়েছিল পিএসজি। নেইমার ফ্রি কিক নিলে বক্সে এমবাপ্পেকে ফাউল করেন মেন্ডি। রেফারি পেনাল্টি দেন, এবার আগেই বল নিয়ে স্পটে দাঁড়িয়ে যান কাভানি। শট নেওয়ার আগে নেইমার এগিয়ে এসে কথা বলেন, শটটা নিজে নিতে চেয়েছিলেন বলেই মনে হয়েছে। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ফরওয়ার্ডকে কোনো সুযোগ দেননি। পেনাল্টি শট নিলেন কাভানি। যেটা খুব একটা ভালোভাবে নেননি নেইমার। দুজনের মধ্যে কয়েক সেকেন্ডের যে কথোপকথন হয়েছে তাতে ইতিবাচক কিছুই ছিল না। যে পেনাল্টি নিয়ে এতকিছু হলো সেটাই আবার মিস করে বসলেন উরুগুয়েন স্ট্রাইকার। কাভানির বুলেট গতির শটটা ডান প্রান্তে ঝাঁপ দিয়ে রুখে দেন লিঁও গোলরক্ষক লোপেস। বল ক্রসবারে লাগলেও গোললাইন প্রযুক্তিতে পরিস্কার দেখা গেছে গোলটা হয়নি।
অবশ্য পেনাল্টি শটের আগে ও পরে গোল হয়েছে দুটি। তার একটির মালিকও পিএসজির কেউ নন। পার্ক ডু প্রিন্সেসে লিঁওর রক্ষণের ভুলে দুবার উল্লাসের উপলক্ষ্য পেয়েছে উনাই এমেরির দল। কিন্তু প্রথম গোলের জন্য বেশ কাঠখড়ই পোড়াতে হয়েছে স্বাগতিকদের। ৭৫ মিনিট পর্যন্ত নেইমার-কাভানি-এমবাপ্পেদের আটকে রাখে লিঁও। পরে মিডফিল্ডার লো সেলসারের ক্রসে পা ছুঁয়েছিলেন কাভানি, কিন্তু লিঁও ডিফেন্ডার মার্সেলোর গায়ে লেগে বল যায় জালে। ৮৫ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গোলে শট নেন এমবাপ্পে, কিন্তু লোপেস শটটা রুখে দিলেও জেরমি মোরেলের পায়ে লেগে বল জড়ায় লিঁওর জালে। বৃথা গেল না নেইমারের জোগানটা।
লিগে ৬ ম্যাচের সবকটিতেই জিতল পিএসজি। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষেও আছে তারা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মোনাকো অবশ্য তাদের আশেপাশেই আছে, মাত্র ১ পয়েন্ট দূরত্বে।
"