ক্রীড়া ডেস্ক
অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর
প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট লেহম্যান
নানা সংকট ঝামেলা পেরিয়ে অবশেষে ক্রিকেটে ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা। আর্থিক ঝামেলা ও চুক্তি সংকটের কারণে অনেক দিন মাঠের বাইরে ছিলেন স্মিথ-ওয়ার্নাররা। সে সময় অপেক্ষমাণ সিরিজগুলো বাতিল হওয়ার গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল বারবার। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া এ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাতিল হলে সেই গুঞ্জন আরো ডালপালা মেলে। তবে শেষ পর্যন্ত সব আশঙ্কা দূর করে ক্রিকেটে ফিরেছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা। তবে চ্যাম্পিয়নস টফির পর আর কোনো সিরিজ না থাকায় এমনিতেই ব্যস্ততা ছিল না খেলোয়াড়দের। তার সঙ্গে নতুন চুক্তিতে সমঝোতা না হওয়ায় দুই মাস ব্যাট হাতেই নেননি স্টিভেন স্মিথরা। এই কথা স্বীকার করে অজি অধিনায়ক নিজেই বলেছিলেন, ‘দুই মাস ব্যাটে হাত দিইনি’। তবে এসবের পরও পূর্ণ শক্তি এবং পূর্ণ প্রস্তুতিতে নিয়েই বাংলাদেশ সফরে আসার খবর জানালেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন লেহম্যান। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ডারউইনে শুরু হচ্ছে দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প। এই ক্যাম্প দিয়ে বাংলাদেশকে মোকাবিলা করার জন্য দল পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস সাবেক এই ব্যাটসম্যানের। অবশ্য একই কথা আগের দিন জানিয়েছিলেন অজি অধিনায়ক স্মিথও। আর্থিক আলোচনায় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) ও অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিএ) সমঝোতায় পৌঁছলে বাংলাদেশ সফর নিয়ে কেটে যায় অনিশ্চয়তা। তার আগে খেলোয়াড়রা সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, চুক্তিতে তাদের শর্ত মানলেই কেবল হবে বাংলাদেশ সফর। অবশ্য বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলা থাকলেও অনুশীলন করে গেছেন খেলোয়াড়রা। তাই লেহম্যান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারছেন, ‘চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময়ও এমনকি খেলোয়াড়রা অনুশীলন ও প্রস্তুতির মধ্যে ছিল, এর মানে হলো ওরা খেলার মধ্যে ছিল। তাই ফিটনেসের দিক থেকে বলা যায় ম্যাচের আগে খেলোয়াড়রা ফিট ও শক্তিশালী। এখন যেটা দরকার, সেটা হলো তাদের দক্ষতার জায়গাটা বাড়ানো।’
এর আগে ২০০৬ সালে শেষবার বাংলাদেশ সফরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দুটি ম্যাচই জিতেছিল রিকি পন্টিংয়ের দল। এক যুগেরও বেশি সময় পর আবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসা অস্ট্রেলিয়াকে এবার দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। ‘বড় দল’ হয়ে ওঠা টাইগারদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে তাই প্রস্তুতিটা ভীষণ দরকার অস্ট্রেলিয়ার। বোর্ডের সঙ্গে আর্থিক ঝামেলায় ঠিকঠাক অনুশীলন না হলেও লম্বা এই ছুটিটা খেলোয়াড়দের সতেজভাবে মাঠে ফেরাবে বলে মনে করলেন লেহম্যান। তার কাছে এই বিরতিটা ইতিবাচকই, ‘অনেক খেলোয়াড়দের এই বিরতিটা খুব ভালো কাজে দিয়েছে। গ্রীষ্মের লম্বা সূচিতে লম্বা ভ্রমণ ক্লান্তি শেষে এখন সতেজ মনে খেলতে পারবে।’
ডারউইনে ৭ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প শেষ করে বাংলাদেশের উদ্দেশে বিমানে চড়বেন স্মিথরা। দেশের মাটিতে প্রস্তুতির পর মিরপুরে প্রথম টেস্টের আগেও অস্ট্রেলিয়া বেশ খানিকটা সময় পাবে নিজেদের গুছিয়ে নিতে। ১৮ আগস্ট ঢাকায় পা রাখার পর প্রথম টেস্টে সফরকারীরা মাঠে নামবে ২৭ আগস্ট। মাঝের ৮ দিনের প্রস্তুতির দিকেই নজর অস্ট্রেলিয়ান কোচের, ‘অনুশীলনের জন্য অনেকটা সময় পাব আমরা। বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গেও মানিয়ে নেওয়ার সময় পাব। প্রথম ম্যাচের ৮-৯ দিন আগে আমরা ঢাকায় পৌঁছব, দেখা যাক তখন আবহাওয়া-পরিস্থিতি কেমন থাকে ওখানে।’ তবে অস্ট্রেলিয়ান কোচ যাই বলুন না কেন, মাঠের লড়াইয়ে মূলত প্রমাণ হয়ে যাবে কতটা প্রস্তুত হয়ে বাংলাদেশ এসেছে অস্ট্রেলিয়া।
"