আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৫ নভেম্বর, ২০১৭

মেয়ের ধর্ষণকারীকে তাড়া করে ধরলেন বাবা

অনেক বিক্ষোভ-প্রতিবাদের পরও ভারতে ধর্ষণের মতো অপরাধ কমানো যাচ্ছে না। ভারতে রাস্তার ধারে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের শিকার এক তরুণী থানায় থানায় ঘুরেও পুলিশের কাছ থেকে কোনো সাহায্য পায়নি। অথচ তার বাবা-মা দুজনেই রেল পুলিশে চাকরি করেন। এরপর বাবা নিজেই রাস্তায় ধর্ষণকারীদের একজনকে তাড়া করে আটক করলেন।

এ ঘটনা নিয়ে এখন তোলপাড় শুরু হয়েছে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ভোপালে। তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়ে সরকার বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে। চার কথিত ধর্ষণকারীর চারজনই এখন পুলিশের হেফাজতে। ১৯ বছরে বয়সী এক তরুণী সন্ধ্যাবেলায় একটি কোচিং ক্লাস থেকে বাড়ি ফিরছিল ভোপালের অতি ব্যস্ত হবাবিগঞ্জ রেলস্টেশনের পাশ দিয়ে। সেখানেই দুই ব্যক্তি মদ পান করার সময় মেয়েটিকে টেনে নিয়ে যায় পাশের একটি কালভার্টের কাছে। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ধর্ষণ করা হয় তাকে। পুলিশের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগে মেয়েটি জানিয়েছে, সে দীর্ঘক্ষণ ধরে তার ধর্ষকদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গেছে ছাড়া পাওয়ার জন্য। কিন্তু একসময় তারা মেয়েটিকে বেঁধে ফেলে। তারপরেই নির্যাতন শুরু হয়। এমনকি তারা বিড়ি-সিগারেট পান করার জন্য মাঝে মাঝে বিরতিও নিচ্ছিল বলে মেয়েটি জানিয়েছে। পরে আরো দুজন যোগ দেয় ধর্ষকদের সঙ্গে।

প্রায় তিন ঘন্টা অত্যাচার চালানোর পরে ছাড়া পায় মেয়েটি। প্রথমেই সে কাছের রেল পুলিশ ফাঁড়িতে যোগাযোগ করে, কিন্তু তার অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি।

মেয়েটির বাবা, মা দুজনেই রেল পুলিশেরই কর্মকর্তা।

ভোপালের অতিরিক্ত রেল পুলিশ সুপার ধর্মেন্দ্র সিং সেটা স্বীকারও করলেন। সিংয়ের কথায়, ‘ঠিকই, এফআইআর দায়ের করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। সেদিন রাতে অভিযোগ কেন জমা পড়েনি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরের দিন সকালে নির্যাতিতা মেয়েটি আসার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’

থানা থেকে মেয়েকে নিয়ে ফেরার পথেই মেয়েটি একজন ধর্ষককে দেখে চিনতে পারে। তার পুলিশ কর্মকর্তা বাবা দৌড়ে গিয়ে একজন ধর্ষককে ধরে ফেলেন।

পুলিশ তারপরে বাকিদের গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে একজন সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অভিযোগ দায়ের করতে না চাওয়া নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ চলেছে ভোপালে। বিক্ষোভের জেরে গতকাল শনিবার সরকার আরো পাঁচ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মহিলা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও নারী আন্দোলনের কর্মী সুনন্দা মুখার্জী বলছিলেন, ‘মেয়েটি তো পুলিশের কাছে গিয়েছিল প্রত্যাশা নিয়ে। কিন্তু পুলিশের সেই একই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা! এই মেয়েটির বাবা না হয় পুলিশ, তাই দৌড়ে একজনকে ধরে ফেলে টেনে নিয়ে গেছেন থানায়। কিন্তু সবাই তো আর তা পারে না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist