আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন সেনাদের মুক্তি দিতে পারে উ. কোরিয়া
কোরীয় যুদ্ধের সময় থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের নিখোঁজ যে সেনা সদস্যরা পিয়ংইয়ংয়ের কাছে আছে তাদের হস্তান্তরে কয়েক দিনের মধ্যেই কার্যক্রম শুরু হতে পারে। মার্কিন প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়া তাদের হাতে বন্দি থাকা সৈন্যদের দক্ষিণ কোরিয়ার জাতিসংঘ কমান্ডের কাছে হস্তান্তর করতে পারে; পরে সেখান থেকে তাদের হাওয়াইয়ের হিকাম বিমান ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হবে। কর্মকর্তাদের একজন ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক’ সেনা হস্তান্তর করা হবে বলে আশা প্রকাশ করলেও ‘অনুমান করা যায় না এমন আচরণের কারণে’ উত্তরের শীর্ষ নেতা কিম জং উন ঠিক কতজনকে ফেরত দিতে চেয়েছেন তা জানাননি। শেষ পর্যন্ত কতজনকে ফেরত পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত হতে কয়েক মাস এমনকি বছর গড়িয়ে যেতে পারে।
সপ্তাহখানেক আগে সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিমের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশিষ্ট সেনাদের ফেরত দিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের রাজি হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
১৯৫০-৫৩ পর্যন্ত চলা কোরীয় যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর প্রায় ৭ হাজার ৭০০ সদস্য নিখোঁজ হয়েছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয়া তাদের কাছে ২০০র মতো সেনা অবশিষ্ট আছে বলে পেন্টাগনকে ইঙ্গিত দিয়েছিল।
২ চার বছরের ওই যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর সাড়ে ৩৬ হাজারের বেশি সৈন্য মারা পড়েছিল।
২০০৭ সালে সর্বশেষ নিউমেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের তৎকালীন গভর্নর বিল রিচার্ডসনের পিয়ংইয়ং সফরের সময় কোরীয় যুদ্ধের বন্দি কিছু মার্কিন সৈন্যকে ফেরত দেওয়া হয়েছিল।
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ সম্মেলনকে ট্রাম্প ‘বিরাট সাফল্য’ হিসেবে দেখলেও ওই বৈঠক থেকে আদতেই নতুন কিছু অর্জিত হয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমা পর্যবেক্ষকরা।
একতরফাভাবে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে অসম্মত হওয়ায় সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে নতুন কোনো প্রতিশ্রুতিও আসেনি, মন্তব্য তাদের।
তবে পিয়ংইয়ং যে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, অবশিষ্ট মার্কিন সেনাদের ফেরত দেওয়ার মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া তার জানান দিতে পারে বলে ধারণা করছে রয়টার্স।
সিঙ্গাপুরে শীর্ষ বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা অগাস্টে নির্ধারিত মহড়াটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি পূরণে ‘যেন বেশি দেরি না হয়’ তা নিশ্চিত করতে ফের উত্তর কোরিয়া যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
চলতি বছরই দুইবার দেশটিতে যাওয়া সিআইএর এই সাবেক প্রধানের সঙ্গে সিঙ্গাপুরেই তৃতীয় দফা দেখা হয়েছিল কিম জং উনের। পম্পেও বলেন, কিম তার দেশের সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যদিও তা অর্জনে এখনো অনেক কাজ বাকি।
"