ডা. মো. জাহেদ পারভেজ

  ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

চুলের জন্য ১১ খাবার

নারী-পুরুষ উভয়েরই টাক হতে পারে। বংশগত কারণে চুলপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, কম সক্রিয় থাইরয়েড গ্র্যান্ড, অপর্যাপ্ত পুষ্টি ও মাথার ত্বকে অপর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন চুলপড়ার অন্যতম কারণ। এ ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক খাবারই চুলের শক্তিশালী গড়ন ও সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে। নিচের ১১টি খাদ্য ও প্রাকৃতিক উপাদান চুল বাড়াতে দারুণভাবে সহায়কÑ

১. নিয়মিত অ্যাসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। কারণ আমাদের শরীর নিজ থেকে এটি উৎপাদনে সক্ষম নয়। এটি সামুদ্রিক মাছ। শুঁটকি ইত্যাদিতে প্রচুর পাওয়া যায়।

২. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের কোনাজেন দ্রুত ভেঙে যায়। ফলে চুলও হয়ে পড়ে ভঙ্গুর। এ কোলাজেন টিস্যু বাড়াতে ভিটামিন-সি গুরুত্বপূর্ণ। সব সাইট্রাসফুড যেমন-আমলকী, লেবু, স্ট্রবেরি, লাল মরিচ থেকে প্রচুর ভিটামিন-সি পাওয়া যায়, যা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় জরুরি।

৩. Biotin যা ভিটামিন B-Complex-এর অন্তর্ভুক্ত। এটি নতুন চুল গজানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উচ্চমূল্য Biotin ক্যাপসুল কিনে খাওয়ার চেয়ে প্রতিদিন সামান্য বাদাম, ঢেঁকিছাঁটা চাল শরীরে প্রচুর পরিমাণে ইরড়ঃরহ-এর যেকোনো উপাদান দিতে পারে।

৪. কেরটিন প্রোটিন চুলের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। আর এ প্রোটিন তৈরিতে METHYL SULFONYL METHANE (MSM) জরুরি, যা লতাপাতাযুক্ত সবজি, বাঁধাকপি ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। তাবে অতিরিক্ত তাপে রান্না করার চেয়ে সিদ্ধ, অর্ধসিদ্ধ খাবারের (MSM) মাত্রা বেশি পাওয়া যায়।

৫. চুলের বৃদ্ধি এবং নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে ‘আয়রন’-এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কম দামি সবুজ শাকসবজি, কলা, জাম, কাজু বাদাম আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। তবে শরীরে খাবার থেকে ‘আয়রন’ গ্রহণে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ প্রয়োজন।

৬. মিনারেল সিনিক্স এবং জিঙ্ক চুলের বৃদ্ধিতে অপরিহার্য। প্রতিদিন ১০০০ মিলিগ্রাম সিনিকা এবং ৩০ মিলিগ্রাম জিঙ্ক চুল গজানোয় ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। শসা, আম, সবুজ শাকসবজি, শিম এগুলোতে প্রচুর সিনিকা পাওয়া যাবে। ডিম এবং লাউয়ের বীচিতে উচ্চমাত্রায় জিঙ্ক পাওয়া যায়।

৭. প্রতিদিন নিয়মিত VITAMIN 'B' COMPLEX গ্রহণ (১০০ মিলিগ্রাম) চুল পাতলা হওয়া প্রতিরোধ করার পাশাপাশি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

৮. VITAMIN চুলের ভঙ্গুরতা কমিয়ে কেরাটিন প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে। সরষের তেল, জলপাই তেল (OLIVE OIL) এবং পালংশাক পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘ই’ জোগান দিতে সক্ষম।

৯. মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি, কুসুম গরম নারিকেল তেল অথবা ROSEMARY OIL নিয়মিত সপ্তহে অন্তত দুই দিন ম্যাসাজ করা।

১০. ভিটামিন ‘ডি’ চুলের বৃদ্ধি ও উজ্জ্বল্য তৈরিতে সাহায্য করে। নাগরিক জীবনে অনেকেই প্রতিদিন AIR CONDITIN ROOM এ আবদ্ধের কারণে সূর্যকিরণ থেকে বঞ্চিত। তাদের জন্য নিয়মিত ভিটামিন ডি ট্যাবলেট গ্রহণ প্রয়োজন।

১১. থাইয়েড গ্ল্যান্ডের কার্যকারিতা অনেকাংশেই চুল পাতলা হয়ে যাওয়া ও টাকপড়ার জন্য দায়ী। থাইরয়েডের সমস্যাসংক্রান্ত রোগী আমাদের দেশে প্রচুর। তাই সম্ভব হলে থাইরয়েড FUNCTION TEST করা প্রয়োজন।

নিয়মিত চুলের যত্ন নিন। চুলসংক্রান্ত সমস্যায় আত্মবিশ্বাসের অভাব, হীনম্মন্যতা ও মানসিকভাবে পিছিয়ে না থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক : চুল বিশেষজ্ঞ ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist