বদরুল আলম মজুমদার

  ৩০ জানুয়ারি, ২০২০

শেষ প্রচারে মরিয়া প্রার্থীরা

আজ মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রচার

সিটি নির্বাচনের আর একদিন বাকি। আজ মধ্যরাত থেকে শেষ হচ্ছে প্রচার। তার আগে, শেষ মুহূর্তে জোরকদমে বিরতিহীনভাবে চলছে প্রচারকাজ। দ্বারে দ্বারে চলছে প্রার্থীদের ভোট প্রার্থনা। এছাড়া ঢাক-ঢোল বাদ্য-বাজনার সঙ্গে নানা জনপ্রিয় গানের প্যারোডি আর নেতাকর্মী সমর্থকদের মিছিলে এখন মুখর ঢাকা মহানগর। প্রচারের শেষ সময়টুকু কাজে লাগাতে সব দলের প্রার্থীরাই এখন মরিয়া। প্রচারে নেমেছেন তাদের স্বজনেরাও।

আজকে রাতের প্রচারণা শেষে, শেষ দুই দিন প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে কমিশনে আবেদন করে অনুমতিও পেয়েছেন। যদিও সামাজিক মাধ্যমে প্রার্থীরা প্রচারণা করে চলেছেন নির্বাচন শুরুর প্রথম দিন থেকেই। এ অবস্থায় মাঠের প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও ভার্চুয়াল প্রচারণা চলবে ভোটের আগ পর্যন্ত।ঢাকার দুই সিটিতে গতকালও আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। দলীয় মেয়র প্রার্থীরা এখন মূল সড়কে শোডাউনের দিকে নজর দিয়েছেন। এতদিন অলিগলিতে ভোট চাইতে গেলেও এখন ঢাকার রাজপথে মিছিল করেই প্রচারণা করছেন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির দুই দলের চারজন মেয়র প্রার্থী গতকাল রাজধানীর বড় বড় সড়কগুলোতে নির্বাচনী প্রচারণা করেছেন। প্রচারণা চলাকালে উভয় দলের প্রার্থীরা ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

এদিকে শেষ সময়ের প্রচারণায় প্রার্থীদের স্বজনরাও ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে দেখা গেছে। দক্ষিণের আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী ফজলে নূর তাপসের আপন ভাই যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান। এছাড়া দুই ভাইয়ের স্ত্রীরাও ভোট চাইতে মাঠে নেমেছেন। তারা ভোটারদের কাছে মেয়রের জন্য দোয়া চান। উত্তরের মেয়র প্রার্থীর স্বজনদেরও মাঠে নেমে ভোট চাইতে দেখা গেছে। বিশেষ করে আতিকুল ইসলামের স্ত্রী, মেয়ে, বড় ভাই ও তিন বোন ভোটের মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। বিএনপির প্রার্থীদের স্বজনরাও বসে নেই। নির্বাচনের শুরু থেকেই ইশরাকে ভাই ও মা ভোটারদের কাছে গিয়ে দোয়া ও ভোট চেয়েছেন। উত্তরের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের দুই ভাই মা ও বাবা নির্বাচনের প্রথম দিন থেকেই ভোটের মাঠে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।

গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকায় গণসংযোগ-পথসভায় গিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, নৌকা দিয়েছে স্বাধীনতা, নৌকা দিয়েছে লাল-সবুজের পতাকা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনকে সামনে রেখে আনুরোধ করব, আপনারা আবার নৌকাকে বিজয়ী করে একটি আধুনিক ঢাকা গড়ার সুযোগ করে দিন। আপনাদের ভোটে আমি মেয়র নির্বাচিত হলে কথা দিতে চাই, একটি আধুনিক, সচল, গতিময় ঢাকা উপহার দিতে সর্বাত্মক কাজ করব ইনশাআল্লাহ।

উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আতিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের কাছে আপনাদের যেতে হবে, উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট চাইতে হবে। আপনারা ঘরে ঘরে নৌকা আর উন্নয়নের বার্তা পৌঁছিয়ে দিন। আর বলুন, নৌকার কোনো ব্যাক গিয়ার নেই, নৌকার গিয়ার একটিই সেটা হলো উন্নয়নের গিয়ার। নৌকা মার্কা নির্বাচিত হলে উন্নয়ন হবেই।

এদিকে গতকাল বুধবার রাজধানীর নর্দ্দা ও মগবাজার এলাকায় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রচারণা করেন তাবিথ আউয়াল। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন নির্বাচন কমিশনকে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, যেভাবে ভোটারদের সাড়া পাচ্ছি, তাতে ধানের শীষের বিজয় ঠেকানো যাবে না। বিজয়ী হওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। আমরা ভোটকেন্দ্রে যাব, আমাদের পোলিং এজেন্টরা যাবেন, প্রার্থীরা যাবেন। একইসঙ্গে তাবিথ আউয়াল ভোটারদেরও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আজ বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও আমি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি, তাদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ভোটাররা বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে আমার কথা শুনছেন, আমাকে আশ্বস্ত করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হামলা মামলার পরও আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আছি। আপনারা সরকারকে প্রশ্ন করেন। হামলা মামলা করে সরকার আমাদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে।

এদিকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণার অনুমতি পেয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। আবেদনের ২৩ দিন পর তাকে এই অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, মোবাইল এসএমএস, ভাইভার ও আইভিআরসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণার বৈধ অনুমতি পেলেন তাবিথ আউয়াল।

ভার্চুয়াল প্রচারণার জন্য তাবিথ আউয়াল অনুমতি নিলেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আর কোনো প্রার্থী এমন অনুমতি না নিলেও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনের শুরু থেকেই সামাজিক মাধ্যমগুলো এ ধরনের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ ধরনের প্রচারনায় অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে বলে অনেক প্রার্থী অভিযোগ করছেন। যদিও এমন প্রচারণার বিষয়ে কোনো মামলা মোকদ্দমা হওয়ার কথা শোনা যায়নি। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন থেকেও সেরকম কোনো প্রতিবাদ করতেও দেখা যায়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close