নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করল ভারত

অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে এবার পেঁয়াজ রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিল ভারত। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা গতকাল রোববার এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার প্রভাব বাংলাদেশের বাজারেও পড়বে। চলতি বছর বন্যার কারণে ভারতের মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে পেঁয়াজের উৎপাদনে বড় ধাক্কা খেয়েছে। ফলে পেঁয়াজের পাশাপাশি নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে কয়েক দিন ধরে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী,

দিল্লির খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ রুপিতে, যা এক মাস আগেও ২০ থেকে ৩০ রুপি ছিল। ভারতের কোনো কোনো এলাকায় পণ্যটির দাম ৮০ টাকাতেও উঠেছে।

আর ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে রোববার প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা এবং দেশিটি ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভারত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের পেঁয়াজ রফতানি করেছে, যার একটি বড় অংশ এসেছে বাংলাদেশে।

সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন হয় ১৭ থেকে ১৯ লাখ টনের মতো। তাতে চাহিদা পূরণ না হওয়ায় আমদানি করতে হয় ৭ থেকে ১১ লাখ টন। স্বল্প দূরত্ব আর সহজলভ্যতার কারণে আমদানির বেশিরভাগটা ভারত থেকেই হয়।

ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়। আর ওই খবরে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে যায় ২০-২৫ টাকা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। টিসিবি খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে।

দেশের চাহিদা পূরণে ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার, মিসর ও তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন এক সপ্তাহ আগেও বলেছিলেন, ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই, দাম দ্রুত কমে আসবে। কিন্তু তার মধ্যেই রোববার ভারতের রফতানি বন্ধের ঘোষণা এলো।

শ্যামবাজারের আমদানিকারক ও পাইকারি বিক্রেতা আবদুল মাজেদ বলেন, এখন পর্যন্ত পেঁয়াজের একমাত্র আমদানি উৎস ভারত। মিয়ানমার থেকে যে পেঁয়াজের চালান এসেছিল, তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে আনার পথে। ফলে ভারত যদি পেঁয়াজ রফতানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, তা দেশের বাজারে বড় রকমের প্রভাব ফেলবে।

কাঁচামালের আড়তদার মেসার্স ইমাম ট্রেডার্সের আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, শ্যামবাজারে রোববারও প্রতি কেজি ভারতীয় ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৫ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। ভারত পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করলে বাংলাদেশের বাজারে আরো অস্থিরতা দেখা দেবে। সরকার তুরস্ক ও মিসরের বাজারকে বিকল্প ভাবলেও বাস্তবতা হচ্ছে, এসব দেশ থেকে পেঁয়াজ আনা বেশ সময়সাপেক্ষ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close