সিলেট প্রতিনিধি

  ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

সিলেটে ড. কামাল

নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই

নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, প্রতিদিনই ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে, পুলিশ প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের দমন করতে কাজ করছে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় হজরত শাহজালাল (র.) মাজারে পৌঁছে জিয়ারত শেষে সিলেট-১ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী খন্দকার মুক্তাদিরের সমর্থনে গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ১৮ কোটি মানুষকে সোচ্চার হতে হবে। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ দেওয়ার দাবি তুলতে হবে। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ আদায় করে, ফজরের নামাজের পরে কেন্দ্রে গিয়ে ভোটটা অবশ্যই দেবেন। যাতে আপনাদের ভোট অন্য কেউ দিতে না পারে। ভোটকেন্দ্রে পাহারা দেবেন। যাতে সেখানে কোনো দুই নম্বরি হতে না পারে।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলো স্বাধীনতার একটা দিক। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশের মালিক জনগণ আর মালিক থাকে না। মালিক না থাকলে আমরা স্বাধীনতা হারাব। সবাইকে নিয়ে দেশের মালিকানা রক্ষা করতে হবে।’

‘আজকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় মালিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা কেন ঐক্যের ডাক দিয়েছি? ঐক্যবদ্ধ হয়ে যদি আমরা দাঁড়াই, কারো অসৎ উদ্দেশ্য থাকলে সেটা হাসিল করতে পারবে না।’

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, সেটি নিশ্চিত হচ্ছে না। নির্বাচনী পরিবেশ এখন খুবই উদ্বেগের কারণ। বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীর গাড়ি ও প্রার্থীর ওপর আক্রমণ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ধরপাকড় চলছে। সংবিধানে রয়েছে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ হতে হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না।

দেশের জনগণ যখনই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তখনই তাদের অধিকার আদায় হয়েছে জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টের এই নেতা বলেন, ‘ঐক্যের ডাকে অসাধারণ সাড়া পড়েছে, সেটা আপনারা লক্ষ করেছেন। খুব কম সময়ের মধ্যে এসেছি কিন্তু জনগণের আগ্রহ অনেক বেশি দেখেছি। জনগণ জানে যে এটা তাদের মালিকানা। সেই মালিকানা রক্ষার জন্য, আমরা যত জায়গায় সম্ভব যাব।

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়ে ড. কামাল বলেন, ‘অনেক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সরকার ও জনগণকে উভয়কে এটা নিশ্চিত করার জন্য যা করার করতে হবে। সরকারের কাছে দাবি, এটা তাদের সাংবিধানিক কর্তব্য। এটা কোনো দয়া-মায়ার ব্যাপার না। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা সরকার করবে, পুলিশ প্রশাসন সবারই কর্তব্য হবে জনগণের অধিকার রক্ষা করা। সরকারের কোনো অসৎ উদ্দেশ্যকে সমর্থন করা।’

সরকারের অভিযোগের বিষয়ে মানহানির মামলা করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিলেট থেকেই আমাদের নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়েছে, এটা ধরেই নিতে পারেন। আমরা মাজারে এসে দোয়া করেছি। দশ-বারো কোটি ভোটার যেন স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে ভোটের অধিকার প্রয়োগ করেন। তারা যেন উপযুক্ত প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মাজার জিয়ারত শেষে দরগাহ প্রাঙ্গণে পথসভায় বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন। প্রথমে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও আ স ম আবদুর রব সিলেটে এসে পৌঁছান। পরের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে ড. কামাল হোসেন ও কাদের সিদ্দিকী আসেন সিলেটে। হজরত শাহজালাল (র.) মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলো। মাজার জিয়ারত শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা দুইভাবে বিভক্ত হয়ে একদল সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় সমাবেশে যান ও অন্যদল জৈন্তাপুরে সমাবেশে যান।

এদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সিলেট আসার উপলক্ষে সকাল থেকে নেতাকর্মীরা দরগাহ প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন। এ সময় বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সেøাগান দিতে থাকেন। পথসভার কারণে শাহজালাল (র.) দরগাহ প্রাঙ্গণে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হলে পুলিশি বাধায় মাইক সরিয়ে ফেলতে হয়। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. সেলিম মিয়া জানান, মাইক ব্যবহারের অনুমতি না থাকায় তাদের এটি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close