আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা
বাণিজ্য সম্পর্ক হ্রাসের হুমকি ট্রাম্পের
ব্রিটিশ দৈনিক সানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যবান্ধব ব্রেক্সিটের যে পরিকল্পনা করেছেন তাতে তাদের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ‘মাঠে মারা’ যেতে পারে।
‘যদি তারা এ ধরনের (ব্রেক্সিট) চুক্তি করে, সেক্ষেত্রে আমরা বরং যুক্তরাজ্যের পরিবর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তি করব। তাই হয়তো (যুক্তরাজ্যের সঙ্গে) ওই চুক্তি আর হবে না।’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্য সফরে এসেছেন। ট্রাম্পের সফর বাতিলের দাবিতে বেনহেইম প্যালেসের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে।
ব্রেক্সিট নিয়ে তার পরামর্শ না মানায় মে কে কিঞ্চিৎ তিরস্কার করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি হলে অনেটাই অন্যরকমভাবে এটা করতাম। আমি আসলে থেরেসা মেকে এটা কিভাবে করবেন সেই বিষয়ে সরাসরি পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমার পরামর্শ গ্রহণ করেননি।’ ট্রাম্পের এ ব্যক্তব্য নিয়ে মের কার্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ট্রাম্পের সফর শুরুর আগে মে বলেছিলেন, ব্রেক্সিটের পর তার বাণিজ্য পরিকল্পনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বাতিল হওয়া উচিত হবে না বরং ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য সম্পর্কের আরো উন্নতি হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন।
২০১৯ সালের ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়ার কথা রয়েছে। যদিও ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্য ও ইইউর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন হবে সে বিষয়ে সমঝোতা হওয়া এখনো বাকি।
ব্রেক্সিটের পর ইইউর সঙ্গে বাণিজ্যের যে পরিকল্পনা মে করেছেন তা নিয়ে এরইমধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠে গেছে।
মের বাণিজ্য পরিকল্পনা পছন্দ না হওয়ায় এ সপ্তাহের শুরুতে প্রথমে ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডেভিড ডেভিস পদত্যাগ করেন। তার পরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বরিস জনসন।
গত রোববার একইদিনে দুই মন্ত্রীর পদত্যাগের ফলে অর্ধদশকের মধ্যে ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় বৈদেশিক এবং বাণিজ্য নীতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ঐক্য ধরে রাখতে সরকার ব্যর্থ হয়েছেন বলে মত অনেকের। যা নিয়ে নিজ দলের মধ্যেই নিদারুণ চাপে আছেন মে। জনসনের পদত্যাগের পর জেরেমি হান্টকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন মে। নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেকে জোরালো সমর্থন দেবেন বলে জানিয়েছেন।
জনসনের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি ‘চমৎকার একজন প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন’।
বৃহস্পতিবার রাতে সান পত্রিকায় ট্রাম্পের এই সাক্ষাৎকার ছাপা হয়।
সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে কে পছন্দ করেন এবং খুবই সম্মান করেন।’
মের বাণিজ্যবান্ধব ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় বিচ্ছেদের পরও যুক্তরাজ্য পণ্যের জন্য ইইউর ‘ফ্রি ট্রেড জোনে’ থাকবে। যদিও এজন্য দেশটিকে ইইউর কিছু নিয়ম মানতে হবে।
গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা অনুমোদন পায়।
ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে থাকা নেতারা মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর’ বলছেন।
"