আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কাঠুয়া-উন্নাও নিয়ে ব্রিটেনে বিক্ষোভের মুখে নরেন্দ্র মোদি
কাঠুয়া-উন্নাও ধর্ষণকান্ড নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় গিয়ে আছড়ে পড়ল সুদূর ব্রিটেনেও। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লন্ডনে পা দেওয়া মাত্র একশোরও বেশি মানুষ ভারতের দুটি নৃশংস ধর্ষণকান্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘মোদি দেশে ফিরে যান’ এবং ‘মোদির ঘৃণা এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াচ্ছি।’ লন্ডনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সঙ্গে কথা বলার জন্য নরেন্দ্র মোদি যখন পার্লামেন্টে আসেন, সেসময় সংসদের বাইরে এই বিক্ষোভ দেখানো হয়। ভারতে যেখানে মহিলাদের ওপর হওয়া যৌন নির্যাতনকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে তোলা হয়, প্রায় প্রতিদিনই এ নিয়ে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখায় ভারতে। কিন্তু তাও সরকার মহিলা ও শিশুদের সুরক্ষা দিতে একেবারেই ব্যর্থ। ভারতীয় বংশো™ভূত এক আইনজীবী নবীন্দ্র সিং বলেন, ‘ভারত সরকার কিছুই করছে না অথচ তুমি সেসব পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছ। এটা পুরো অবিচার ছাড়া কিছু নয়। চার বছর সরকারে থাকার পরও প্রধানমন্ত্রী মহিলা এবং শিশু সুরক্ষায় কোনো নীতি পরিবর্তন করতে পারেননি।’ কাঠুয়া এবং উন্নাও ধর্ষণকা-ের প্রতিবাদের রেশ ব্রিটেনেও এসে পৌঁছেছে। তাই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ব্রিটেনবাসী, জানান বিক্ষোভকারীরা।
কাঠুয়া নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয় : কাঠুয়ায় দলবদ্ধ ধর্ষণ ও খুন নিয়ে দিনভর বিক্ষোভ হয়েছে লন্ডনে। এমনকি কাঠুয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যেসব সংগঠন, তাদের ‘ভারত কি বাত....সব কে সাথ’ অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। গতকাল সেই অনুষ্ঠানেই কাঠুয়ার নাম না করে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন নরেন্দ্র মোদি। বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে বোঝাতে চাইলেন, নাবালিকা ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। প্রসঙ্গত, দেশে বিরোধীরা পরিসংখ্যান দিয়ে বলে, বিজেপি-শাসিত রাজ্যেই নারী ও শিশুকন্যা নির্যাতনের ঘটনা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গতকাল লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টার সেন্ট্রাল হলের মঞ্চে সঞ্চালক ছিলেন সেন্সর বোর্ডের প্রধান প্রসূন জোশী। কার্যত কোনো অস্বস্তিকর প্রশ্নই ছিল না। বিরোধীদের দাবি, সমর্থকদের নিয়ে পুরোপুরি সাজানো অনুষ্ঠান করা হয়েছে। সেই অনুকূল পরিবেশেই হঠাৎ নাবালিকা ধর্ষণ নিয়ে মুখ খুললেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণের চেয়ে ভয়ানক আর কী হতে পারে? তবে আমাদের জমানায় এমন ঘটনা বেশি হয়েছে না অন্যদের জমানায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাও লজ্জাজনক।’ তার কথায়, ‘মেয়ে দেরি করে বাড়ি ফিরলে মা প্রশ্ন করেন কোথায় গিয়েছিলে। রাতে ফোনে কথা বললে প্রশ্ন করেন কার সঙ্গে কথা বলছ। ছেলেরা দেরি করে ফিরলে প্রশ্ন করা উচিত কোথায় ছিলে।’ হল তখন ফেটে পড়ছে হাততালিতে।
ঘটনাচক্রে এ দিনই, অমেঠীর এক শিশুকন্যা দীপালির ভিডিও টুইট করেছেন রাহুল। লিখেছেন, ‘দীপালির কাছে আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা রয়েছে। সে বোঝাতে চায়, সুখের অশ্রু, দুঃখের অশ্রুর মধ্যে কোনো তফাৎ নেই।’ রাহুল পরোক্ষে নাবালিকাদের অবস্থা নিয়েই খোঁচা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
বিদেশের মাটি থেকে রাহুলের নাম না করে আরো খোঁচা দিয়েছেন মোদি। বলেছেন, ‘আমি দারিদ্র্যের কথা বই পড়ে শিখিনি।’ পরে হাসতে হাসতে তার মন্তব্য, ‘সব সময় কটূক্তি করতে একটা লোক চাই তো। সে দায় আমিই নিয়েছি।’
"