আসাফুর রহমান কাজল, (মহানগর) খুলনা

  ০২ ডিসেম্বর, ২০১৯

বাজারে আসছে চুইঝাল গুঁড়ো

প্রাকৃতিকভাবে ভেষজ গুণসম্পন্ন গাছ চুইঝাল। এর একটি আলাদা ঘ্রাণ রয়েছে, যা তরকারি বা রান্না করা মাংসে আনে আলাদা স্বাদের আমেজ। অনেকে মাংস রেখে শুধু চুইঝালই খান আয়েশ করে। এতে রয়েছে অনেক ভেষজ গুণ। লতাজাতীয় চুইঝালের পাতা, কা-, শেকড়, ফুল, ফল, ডালÑ সবই ঔষধি গুণসম্পন্ন। হজম, ব্যথা-বেদনাসহ নানা রোগে চুই খুবই কার্যকর। তাই তো চুইয়ের ব্যবহার বাড়ছে দিন দিন। লতাজাতীয় এ গাছটি নতুন রূপে অর্থাৎ গুঁড়ো মসলা আকারে তৈরি করেছেন কৃষক নবদ্বীপ মল্লিক।

চুইঝাল লতাজাতীয় মসলা ফসল, অন্য যেকোনো গাছের আশ্রয় নিয়ে বেড়ে ওঠে। মসলা হিসেবে এর শাখা, শিকড় উভয়ই ব্যবহার করা হয় এবং পাতাও ব্যবহার করা হয় শুকিয়ে। তবে শাখার চেয়ে শিকড়ের ঝাল বেশি। মাংসের স্বাদ বাড়ানোর জন্য খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর অঞ্চলে চুইঝালের ব্যবহারের প্রচলন দীর্ঘদিনের। গাছটি দেখতে অনেকটা পানগাছের মতো।

আধুনিক চাষাবাদে ডুমুরিয়া বরাতিয়ার কৃষক নবদ্বীপ মল্লিক চুইয়ের গুঁড়ো তৈরি করছেন। ইতোমধ্যেই তার চুইগুঁড়ো রান্নায় ব্যবহার শুরু হয়েছে। প্রশংসিত হচ্ছেন নানা মহল থেকে।

কৃষক নবদ্বীপ মল্লিক জানান, আমি কৃষক পরিবারের সন্তান। পড়ালেখা শেষ করে, চাকরি না করে শুরু করি কৃষিকাজ। চুইয়ের আধুনিক চাষাবাদ শুরু করি, যা এখন দেশব্যাপী সাড়া পড়েছে। কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে আমি এ কাজ শুরু করি। দেশের বাইরের কেউ এটি চাইলে দেওয়া মুশকিল হয়ে যায়। পরিবহনে অনেক সময় সমস্যা হয়। কয়েক দিন ঘরে রেখে দিয়ে এটি শুকিয়ে যায়। তখন আর সেই স্বাদ থাকে না। সে কারণে আবিষ্কার করলাম জিরার গুঁড়োর মতো চুইয়ের গুঁড়ো (পাউডার) তৈরি করতে। আমি পেরেছি। এখন চুইয়ের ব্যবহার বেড়ে যাবে, বেড়ে যাবে পরিধি। সংরক্ষণ করা যাবে বছরজুড়ে।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, চুই একটি উচ্চমূল্যের ফসল। এটি মূলত মাংসসহ সব ধরনের তরকারির সঙ্গে মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। অত্যন্ত ঔষধি গুণসম্পন্ন মসলা। এটির স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য বর্তমানে পাউডার করা হচ্ছে। এটি সম্প্রসারণের জন্য আমরা কাজ করছি।

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, চুই মাংসের সঙ্গে খাদ্য হিসেবে বেশি পরিচিত। তবে চুইয়ের ভর্তা, আচারসহ নানা মুখোরুচক খাদ্য হিসেবে এর ব্যবহার বাড়ছে। বর্তমানে এটি গুঁড়ো আকারে বাজারজাতকরণ শুরু হয়েছে। এটি ভালো উদ্যোগ। এর ফলে বছরজুড়ে এবং দেশের বাইরেও এর ব্যবহার বেড়ে যাবে। চুইয়ের পাতা থেকে শুরু করে শিকড় পর্যন্ত সবই খাওয়া যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপপরিচালক পংকজ কান্তি মজুমদার জানান, চুইঝাল একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য। নিয়মিত চুইঝাল খাওয়ার মধ্য দিয়ে বহু রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close