নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ নভেম্বর, ২০১৯

ঝিনাইদহে যুদ্ধাপরাধ

তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চূড়ান্ত

মুক্তিযুদ্ধের সময় আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে ঝিনাইদহের হলিধানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রশিদ মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

গতকাল রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটির সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়। এটি তদন্ত সংস্থার ৭৫তম তদন্ত প্রতিবেদন। আসামিদের মধ্যে মো. আবদুর রশিদ মিয়া (৬৬) ও মো. সাহেব আলী মালিথা (৬৮) কারাগারে আছেন। অন্যজন পলাতক, যার নাম প্রকাশ করেনি তদন্ত সংস্থা।

তদন্ত সংস্থার আবেদনে গত ২১ আক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরদিনই রশিদ ও সাহেব আলীকে গ্রেফতার করে ঝিনাইদহ থানা পুলিশ। তখন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান আসামিদের রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরে বলেন, মো. আবদুর রশিদ মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। স্বাধীনতার পর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) কৃষক সংগ্রাম সমিতির হলিধানী ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে এই পার্টির পরোক্ষ সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং ১৯৮৮ হলিধানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৬ সালে এই আসামি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে হলিধানী ইউনিয়ন সভাপতি হন। এখন পর্যন্ত তিনি এই পদে আছেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবদুর রশিদ মিয়া আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আর মো. সাহেব আলী মালিথা একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও পরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন বলে জানান হান্নান খান। তদন্তের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে সানাউল হক বলেন, তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৭ জুন তদন্ত শুরু হয়। তাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য প্রমাণ তদন্তে উঠে এসেছে। এসব অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামিরা ঝিনাইদহ জেলার সদর ও হালিধানী ইউনিয়নের কোলা গ্রামে এসব অপরাধ সংঘটিত করে,’ বলেন সানাউল হক।

তদন্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক খান বলেন, সাক্ষীদের জবানবন্দিসহ মোট ৭৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনটির তিনটি ভলিউম করা হয়েছে। সোমবার প্রতিবেদনটি প্রসিকিউশনে দাখিল করা হবে।

অভিযোগ-১ : ১৯৭১ সালের ১৭ জুন মো. আবদুর রশিদ মিয়ার নেতৃত্বে সহযোগী সাহেব আলী মালিথা ও পলাতক আসামিসহ ১০ থেকে ১৫ জন রাজাকার কোলা গ্রামে শহীদ আজিবর মন্ডলদের বাড়ি আক্রমণ করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা মহির উদ্দিন মন্ডল ও আসির উদ্দিন মন্ডলকে না পেয়ে তাদের তিনভাই আজিবর, হবিবর রহমান মন্ডল ওরফে হাবা মন্ডল ও আনছার মন্ডলকে আটক ও মারধর করে। পরে তাদের পিঠমোড়া করে বেঁধে ঝিনাইদহ শহরের দিকে নিয়ে যাওয়ার পর মাগুরা রোডের ধোপাঘাটা ব্রিজের ওপর গুলি করে হত্যার পর লাশ নবগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয় আসামিরা।

অভিযোগ-২ : ১৯৭১ সালের ২৪ জুন আসামিরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী কোলা গ্রামের নিরীহ, নিরস্ত্র মুলুক চাঁনকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর তার আর সন্ধান মেলেনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close