শরীয়তপুর প্রতিনিধি

  ২৩ এপ্রিল, ২০১৯

পদ্মা সেতুর ১৬৫০ মিটার দৃশ্যমান হচ্ছে আজ

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে বসতে যাচ্ছে আরেকটি স্প্যান। আজ মঙ্গলবার জাজিরা প্রান্তে বসানো হচ্ছে ১১তম স্পেনটি। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই স্প্যান ভাসমান ক্রেন দিয়ে বসানো হবে। এটি বসালে এই সেতুর দৃশ্যমান হবে ১৬৫০ মিটার। ১১তম স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর বসবে বলে জানা গেছে।

এছাড়া গত বছরের মাওয়া পয়েন্টে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর আরো একটি স্প্যান বসানো হয়। জাজিরা পয়েন্টে ওই স্প্যানটি বসলে পদ্মা সেতুতে ১১টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ করা হবে।

আজ মঙ্গলবার ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর ১০ম স্প্যানটি বসানো হবে বলে সেতু বিভাগের প্রকৌশলী নিশ্চিত করেছেন। প্রতি মাসেই একটি করে স্প্যান বসানো হবে বলে আশা করছেন তারা। এরই মধ্যে সেতুর প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে সবকয়টি স্প্যান বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান হবে। সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে মাওয়ার মুন্সীগঞ্জের কুমারভোগের বিষেশায়িত জেডি থেকে স্প্যানটি নিয়ে শক্তিশালী ভাসমান ক্রেন তিয়া নি হাউ জাজিরার উদ্দেশে রওনা দেয়। গত সোমবার বিকালে স্প্যানটি নিয়ে জাজিরা নাওডোবা এলাকায় পৌঁছে। আজ সকালে পিলারের ওপর তোলা হেেচ্ছ বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ।

গত বছর আরো একটি স্প্যান ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। এ নিয়ে দৃশ্যমান হবে ১ হাজার ৬০০ মিটার।

গত ১৮ এপ্রিল ১৩ ও ১৪নং পিলারের ওপর মাওয়া প্রান্তে বসে ৯নং স্প্যানটি। ১০ম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। প্রতি মাসে আরো একটি স্প্যান বসবে।

২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর ১ম স্প্যান এবং ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান এবং ১০ মার্চ তৃতীয় স্প্যান ও ১৩ এপ্রিল ৪র্থ স্প্যান ২৯ জুন ৫ম স্প্যান বসানো হয়।

২০১৯ সালে ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ স্প্যান, ২০ ফেব্রুয়ারি ৭ম স্প্যান বসানোর হয়েছে। ২০ মার্চ ৮ম স্প্যান, ১৮ এপ্রিল ৯ম স্প্যান বসানো হয়। এছাড়া মাওয়া পয়েন্টের দিকে গত বছর আরো একটি স্প্যান ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। স্প্যানটি তৈরি করা হয়েছে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের ওপর বসানোর জন্য।

নকশা জটিলতা ও পিলার তৈরি না হওয়ায় এবং ওয়ার্কশপে জায়গা না থাকায় অস্থায়ীভাবে ৪ ও ৫ নম্বার পিলারে তুলে রাখা হয় স্প্যানটি। নকশা জটিলতা কেটে যাওয়ার পর ৬ ও ৭ নম্বর পিলার তৈরি হলে স্প্যানটি সেখানে সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ।

প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২১টি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। এ স্প্যানটি বসানোর সংবাদে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।

প্রতি মাসেই স্প্যান বসানো হবে বলে জানিয়েছেন সেতু বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। দেশের অর্থনৈতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের শহর। কলকারখানায় ভরে উঠবে এ এলাকা। শ্রমজীবী মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

সর্বক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে আশা করছেন পদ্মা পাড়ের মানুষ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ৭ কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে।

দোতলা এ সেতুর নিচতলায় চলবে ট্রেন। স্থাপন করা স্প্যানগুলোয় এখন রেলের স্লাব বসানোর কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের স্প্যানগুলোয় ১২৮টি স্লাব বসানো হয়েছে। পুরো সেতুর ২ হাজার ৯৫৯টি স্লাব বসানো হবে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে স্প্যান ও স্লাব বসানোর কাজ চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close