রামু প্রতিনিধি

  ১১ মার্চ, ২০১৮

পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন : পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে অবৈধভাবে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন ও পাচার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কাজে জড়িত রয়েছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাহান মার্মার নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। তারা সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন। এতে বনাঞ্চল ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাহাড়ের আনাচে-কানাচে, গভীর জঙ্গলে, পাহাড়ের উপত্যকায় কিংবা সমতল ভূমিতে গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলিত বড় পাথরগুলো সেখানে ভাঙা হচ্ছে এবং ছোটগুলো ট্রাক-পিকআপ ভ্যানে করে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হচ্ছে। এরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে স্থানীয়রা কোনো ধরনের প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।

স্থানীয়রা জানান, বাহান মার্মা দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক দিয়ে পাথর উত্তোলন করছেন। এ ঘটনায় সোনাইছড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে স্থানীয়রা লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। কিন্তু এতেও কোনো প্রতিকার না হওয়ায় কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরে লিখিত অভিযোগ দেন বাগান মালিক ডা. কালিপদ দাশ।

এদিকে, অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ মার্চ কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাবের নেতৃত্বে একটি দল সোনাইছড়ি ইউনিয়নের মাছকুম নামক ঝিরি ও ডা. কালিপদ দাশের জমিতে সরেজমিন গিয়ে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলনের দৃশ্য দেখতে পায়। এ সময় তিনি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে খোঁজখবর নেন। সে সময় পাথর উত্তোলনের কোনো অনুমতি না থাকার বিষয়টি অবগত হয় পরিবেশ অধিদফতর। পরিদর্শনকালে পাথর উত্তোলন না করার নির্দেশ দেন পরিবেশ কর্মকর্তা।

বাগান মালিক ডা. কালিপদ দাশ জানান, মাটি খোদাই ও পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলনের কারণে তার বনজ গাছের বাগানটি হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোনো সময় পাহাড় ধসসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।

কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব জানান, সোনাইছড়িতে ডা. কালিপদ দাশের বাগান ও সংলগ্ন মাছকুম নামক ঝিরিতে পাথর উত্তোলনের সত্যতা পাওয়া গেছে। দীর্ঘ ঝিরি ও পাহাড় কেটে উত্তোলন করা বিপুল পরিমাণ পাথরের স্তূপ পাচারের জন্য মজুদ করা হয়েছেÑ তা দেখতে পেয়েছেন তিনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

কক্সবাজার জেলার বিশিষ্ট পরিবেশবাদী ও পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়েস কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী এম ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, পাথর উত্তোলন বন্ধ করা না হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম সরওয়ার কামাল জানান, উপজেলার কোথাও পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেবল জেলা প্রশাসকই এ অনুমতি দিতে পারেন। পাথর উত্তোলন ও পাচারের ঘটনায় অভিযুক্ত সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহান মার্মার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে সংযোগ বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist