reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ আগস্ট, ২০১৭

‘ভরসা রাখুন, প্রত্যেকেই রিলিফ পাবেন’

বন্যার্ত প্রতিটি মানুষের কাছেই ত্রাণ পৌঁছে যাবে আশ্বাস দিয়ে সরকারের প্রতি ভরসা রাখার অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পানি নেমে যাওয়ার পর রাস্তাঘাট মেরামত, ঘরবাড়ি নির্মাণ, কৃষকদের নতুন করে ফসল ফলাতে সহায়তা দেয়ার ঘোষণাও ‍দিয়েছেন তিনি।

রোববার বন্যা দুর্গত দিনাজপুর সদর ও বিরল উপজেলা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে জেলা জিলা স্কুল আশ্রয় কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরণ করেন। এরআগে তিনি সেখানে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যা যা করা দরকার, তা করব।

জনসভায় আসা মানুষদেরকে শেখ হাসিনা বলেন, বন্যা দেখার সাথে সাথে আমরা বিদেশ থেকে খাদ্য কেনা শুরু করেছি, যথেষ্ট মজুদ আমাদের আছে। আমার দেশের প্রত্যেকটা মানুষ, বন্যাকবলিত যেসমস্ত এলাকায় খাদ্যশস্য নষ্ট হয়েছে বা কোনো ক্ষতি হয়েছে, প্রতিটি মানুষ যাতে ক্ষুধার অন্ন পায়, ইনশাল্লাহ সে ব্যবস্থা আমরা করব এবং করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের ওপর ভরসা রাখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে মঙ্গা দূর করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই। গত আট বছরে এই মঙ্গার কথা শুনেনি কেউ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে রিলিফের ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেকে যেন খাদ্যশস্য পান, রিলিফ পান সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও ব্যাপকভাবে নেমেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব দিয়ে আমরা রিলিফ দেয়ার জন্য প্রত্যেকটা বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করার জন্য এবং সাহায্য দেয়ার জন্য আমরা বলে দিয়েছি। নেতৃবৃন্দ ভাগ হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মানুষের মাঝে যেন ত্রাণ সুষ্ঠুভাবে ভাগ হয়, তার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। মানুষের কী কী অসুবিধা আছে, তা দেখার ব্যবস্থা করছেন।

কেবল ত্রাণ নয়, বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পানিতে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে। আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, যেমন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়, এলজিইডি, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়-প্রত্যেকে তৈরি হয়ে আছে এই পানি নেমে গেলেই রাস্তা মেরামতের কাজ আমরা শুরু করে দেব। কৃষক ভাইয়েরা যাদের ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে তারা যেন পুনরায় কৃষি ঋণ পেতে পারে, বীজ ও বীজতলার ব্যবস্থা করতে পারে, সে উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। প্রায় দুই কোটি কৃষক বিশেষ উপকরণ কার্ড পেয়ে থাকে, এক কোটি কৃষক ১০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে, এ ক্ষেত্রেও যা যা করণীয় আমরা তা করব।

বানভাসী মানুষদের কাছ থেকে ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায়ে যেন জুলুম করা না হয় সে নির্দেশও দেন প্রধানমন্ত্রী। ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ আবার শুরু হবে বলেও জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব এলাকায় বন্যা হয়েছে সেসব এলাকায় চিকিৎসা সেবা, ওষুধপত্র যাতে সকলে পান, তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে এবং তা দেয়া হবে।

যাদের ঘর নাই, বাড়ি নাই অথবা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদেরকে প্রয়োজনে খাস জমি অথবা কিনে হলেও জমি দেয়ার কথা জানান শেখ হাসিনা। বলেন, যাদের ঘর নাই, বাড়ি নাই, তাদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দেব। আমি আপনাদের জন্য রাজনীতি করি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, আমার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া বলতে কিছু নাই। আপনারা যেন ভাল থাকেন, আপনাদের জীবন যেন উন্নত হয়, আপনাদের ছেলে মেয়েরা যেন লেখাপড়া করে, আপনারা যেন ভালভাবে বাঁচতে পারেন, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আমি আপনাদের পাশে যেন দাঁড়াতে পারি, সহযোগিতা করতে পারি, সেটাই আমাদের দায়িত্ব, সেটাই আমাদের কর্তব্য।

আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল, তখনও যখন বন্যা, খরা বা দুর্যোগ ছুটে আসার কথা স্মরণ করিয়ে দেন শেখ হাসিনা্ বলেন, যতক্ষণ আমি আছি, আপনাদের জন্য নিবেদিত প্রাণ। আমার বাবা জীবন দিয়ে গেছেন, আমিও আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনে জীবন দিয়ে যাব, এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। পরে প্রধানমন্ত্রী বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ ইউনিয়নের আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন ও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। দিনাজপুর সার্কিট হাউজে দুপুরের নামাজ ও খাওয়া শেষ করে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শেখ হাসিনা,আওয়ামী লীগ,প্রধানমন্ত্রী,ত্রাণ বিতরণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist