প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ
আজ সন্ধায় দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলেই আগামীকাল সোমবার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এর আগে দেশের প্রধান ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান। সুপ্রিম কোর্টসংলগ্ন এই ময়দানে লাখো মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। সেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও আলাদাভাবে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ,মন্ত্রিসভার সদস্য, বিচারপতি, কূটনীতিক, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তবে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
আজ রোববার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুরো ঈদগাহ ময়দানে শামিয়ানা টাঙানো হয়েছে। শামিয়ানার উপরে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা বসানোর কাজও শেষ হয়েছে। কয়েকশ বৈদ্যুতিক পাখা লাগানো হয়েছে। ময়দানের সাজসজ্জার কাজও শেষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাঠ পরিদর্শনে আসা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, ‘প্রায় এক লাখ মুসল্লির উপযোগী করে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ৮৫ হাজার পুরুষ এবং পাঁচ হাজার নারী মুসল্লির উপযোগী করে ঈদগাঠ মাঠ তৈরি করা হয়ছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এখানেই সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররমে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।’
ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, ‘ঈদগাহ এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ-র্যাবের দুটি আলাদা নিয়ন্ত্রণকক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে কেউ অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
ঈদগাহ মাঠে কর্মরত পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার জন্য ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এ ছাড়া ঈদগাহের নিরাপত্তায় সোয়াট টিম, ডগ স্কোয়াড ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে শুধু জায়নামাজ আনা যাবে,মোবাইল ফোন বা কোনো ধরনের ডিভাইস আনা যাবে না।
ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতে নিয়োজিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধু ঈদগাহ মাঠের ভেতরেই বসানো হয়েছে ৬৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা। রাষ্ট্রপতিসহ বিশিষ্টজন ঈদের নামাজ পড়তে আসবেন হাইকোর্টের ফটক দিয়ে। সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে ঈদগাহ ময়দানের ফটক। তবে নিরাপত্তা তল্লাশির পরই সবাই ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করতে পারবেন। মাঠ প্রস্তুতে দুই সপ্তাহ ধরে ঈদগাহে দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন দুই শতাধিক শ্রমিক।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে লাখো মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। এর মধ্যে শামিয়ানার ভেতরে ৮৫ হাজার পুরুষ ও পাঁচ হাজার নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন। দুই লাখ ৬০ হাজার বর্গফুটের জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভিআইপিদের জন্য ঈদগাহের ভেতরে প্রায় তিন হাজার বর্গফুট জায়গা আলাদা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে থাকবে। মাজারের রাস্তাটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।পিডিএসও/রানা