কলকাতা প্রতিনিধি

  ২৭ জানুয়ারি, ২০২০

পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিকত্ব আইনবিরোধী প্রস্তাব পাস

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাস হয়েছে সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব। দেশের চতুর্থ রাজ্য হলো পশ্চিমবঙ্গ যেখানে এবার এ প্রস্তাব পাস হলো। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বিজেপির পাকিস্তানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন। এই ধরনের সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব এরই মধ্যে কেরালা, পাঞ্জাব ও রাজস্থান রাজ্যে পাস হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভায় সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের রাজ্যে সিএএ, এনআরসি আর এনপিআর করার অনুমতি দেব না। মানুষ আতঙ্কে আছেন। সব ধরনের নথির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে হয়রানি হচ্ছেন। তিনি বলেছেন, এই লড়াই শুধু সংখ্যালঘুদের না। আমার হিন্দু ভাই-বোনেদের কাছে কৃতজ্ঞ, ওরা সামনে থেকে এই লড়াইটা করছেন। তার রাজ্যে সিএএ, এনআরসি আর এনপিআর হবে না এমন ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরো বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করব।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বলেছেন, সিএএ অনুযায়ী আপনি বিদেশি চিহ্নিত হবেন। এটা একটা ভয়ঙ্কর খেলা। মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে। তাই ওদের, বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না, নাগরিকদের সতর্ক করে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিটেনশন সেন্টার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, আপনাকে সন্দেহভাজন নাগরিক চিহ্নিত করে, ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো, এই পন্থা গ্রহণযোগ্য নয়। যেভাবে সবকিছু চলছে এখন তো মনে হচ্ছে না জন্মালেই ভালো হতো। এখন মানুষ ভীত-শঙ্কিত। তারা ভাবছেন দেশ ছাড়তে হবে, সব ধরনের নথির জন্য আবার জনগণ লাইনে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাকিস্তানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তকমা দিয়েছে বিজেপি। সেই তকমাকে কটাক্ষের সুরে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ওরা সবসময় পাকিস্তান নিয়ে কথা বলে, আর ভারত নিয়ে কম ভাবে।

এ নিয়ে কেরালা, পাঞ্জাব, রাজস্থানের পর পশ্চিমবঙ্গ চতুর্থ রাজ্য, যেখানে বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাস হলো। সোমবার বিধানসভায় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পেশ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি নাগরিকত্ব আইন। সেই কারণে তার বিরোধিতা করা হচ্ছে। বাম ও কংগ্রেস আগেই জানিয়েছিল, তারা সিএএ-বিরোধী প্রস্তাবে সমর্থন জানাবে। সেই মতোই বাম ও কংগ্রেসের সমর্থনে সেই প্রস্তাব পাস হয়ে যায়। শুধু কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন ছিল বাম ও কংগ্রেসের। বামেরা বলেন, তারা যখন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে চেয়েছিল, তখন কেন সরকার তা আনতে দেয়নি, সরকারের বিলম্বিত বোধোদয় হয়েছে বলে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান।

সোমবার বিধানসভায় এক বিজেপি বিধায়ক প্রস্তাবের বিরোধিতায় বলতে উঠলে ওঠে দাঁড়িয়ে একযোগে প্রতিবাদ জানান তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের বিরুদ্ধে সেøাগানও ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২৭ জানুয়ারি কেরালা, পাঞ্জাবের পথে হেঁটেই বাংলা বিধানসভাতেও সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পেশ হলো। এই প্রস্তাবকে সমর্থনের জন্য কংগ্রেস ও বামদের সমর্থন চেয়ে সরকারের তরফে চিঠি দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বয়ান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় বাম ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পশ্চিবঙ্গ,নাগরিকত্ব,প্রস্তাব,পাস,বিধানসভা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close