reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ জানুয়ারি, ২০১৮

আম আদমি পার্টির ২০ বিধায়ককে অযোগ্য ঘোষণা

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশ ভারতের রাজধানী দিল্লির মূখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির (এএপি) ২০ জন বিধায়ককে অযোগ্য করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। দেশটির নির্বাচন কমিশনের পাঠানো সুপারিশে আজ রোববার সম্মতি দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, দিল্লি বিধানসভায় ক্ষমতাসীন দল এএপির ২০ জন বিধায়কের সদস্যপদ বাতিল হয়েছে। দেশটির নির্বাচন কমিশনের পাঠানো সুপারিশে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ অনুমোদন দেওয়ায় তাঁদের সদস্যপদ বাতিল হলো। তবে তাতেও দিল্লিতে এএপি সরকারের পতন হবে না। এর আগে ২০১৬ সালে ওই বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আরজি জানায় কংগ্রেস। পরে এই কেস তুলে নেওয়ার আরজি জানান বিধায়করা। গত বছর সেই আরজি প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন কমিশন। ওই ২১ বিধায়কদের মধ্যে একজন গত বছর নিজের পদ থেকে পদত্যাগ করায় সংখ্যাটি ২০-এ নেমে এসেছিল।

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কার্যালয় থেকে দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া মতামতের আলোকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। আমি, রামনাথ কোবিন্দ, ভারতের প্রেসিডেন্ট, নিজ ক্ষমতাবলে ঘোষণা করছি যে ওই ২০ বিধায়ক দিল্লি বিধানসভার সদস্য হিসেবে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের ফলে ওই বিধায়কদের নির্বাচনী আসনে আগামী ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হবে। এতে করে দিল্লি বিধানসভায় আসন বাড়ানোর সুযোগ পাবে ওই বিধানসভার বিরোধী দল বিজেপি। এখানে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দখলে আছে ৪টি আসন। আর দেশটির অন্যতম বড় বিরোধী দল কংগ্রেসের কোনো আসনই নেই। এই বিষয়ে আজ রোববার এএপির নেতা গোপাল রাই হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করা বিষয়টি দুর্ভাগ্যের। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় সব আইনি পদক্ষেপ নেবে এএপি।

এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিধায়ক হয়েও লাভজনক পদে থাকার অভিযোগ রয়েছে এএপির ওই ২০ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালে দিল্লি বিধানসভায় জেতার পর কেজরিওয়াল তার দলের ২১ জন বিধায়ককে বিধানসভার সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এই নিয়ে প্রশান্ত প্যাটেল নামের একজন আইনজীবী দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ জানান। পরে রাষ্ট্রপতি তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্বাচন কমিশনে পাঠান। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ওই বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করার সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠায়।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও তার দলের দাবি, ওই বিধায়কদের লাভজনক পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি কোনো সাংবিধানিক নিয়ম ভঙ্গ করেনি। এএপির আইনপ্রণেতারা এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন। আগামীকাল সোমবার এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এই বিষয়ে এএপির প্রধান মুখপাত্র সৌরভ ভরদ্বাজ আগে বলেছিলেন, লাভজনক পদ তখনই হবে, যখন তা থেকে কেউ সুবিধা নেবে। কারও বিরুদ্ধে বেতন বা প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ নেই।’ আজ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, তার দলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বলেন, বিজেপি তাদের ব্যর্থতা থেকে জাতির নজর সরিয়ে নিতেই এমন কাজ করছে। এর ফলে নির্বাচন কমিশনের মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে।

অবশ্য দিল্লির বিরোধী দলগুলো শুরু থেকেই উচ্চকণ্ঠে বিধায়কদের লাভজনক পদে থাকার বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রজ্ঞাপনের পর কংগ্রেস ও বিজেপির নেতারা বলেছেন, নৈতিক কারণে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরে যাওয়া উচিত। তবে রামনাথ কোবিন্দের আগে রাষ্ট্রপতি পদে থাকা প্রণব মুখার্জি এই বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এর বদলে তিনি বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

নির্বাচন কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি ওই বিধায়কদের অযোগ্য ঘোষণা করায়, এখন বিধানসভার ওই আসনগুলো শূন্য ঘোষণা করা হবে। পরে ওই আসনগুলোয় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে দিল্লি বিধানসভার ৭০টি আসনের মধ্যে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল এএপির দখলে ছিল ৬৬টি। এখন এএপির আসনসংখ্যা ৪৬-এ নেমে আসবে। তবে তাতেও এএপি সরকারের পতন হবে না। কারণ, তখনো মোট আসনের অর্ধেকের বেশি থাকে আম আদমি পার্টির হাতে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই ২০টি আসনে উপনির্বাচন করার সাংবিধানিক বিধান রয়েছে।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অযোগ্য ঘোষণা,আম আদমি পার্টি,২০ বিধায়ক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist