রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুহুল কুদ্দুস মীর ফরহাদ আলী গত ছয় মাস ধরে নিখোঁজ। সাধারণ ডায়েরি করার চার মাস পার হলেও এখনো তার কোনো খোঁজ করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা গেছে, ফরহাদ আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। নগরীর ভাটাপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তার বাবা মীর ফজলুল করিম স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের হিসাব সহকারী পদে অবসর গ্রহণ করেছেন। এখন ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদরের আলুপদিয়া মনিরামপাড়া নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন তারা। সেখান থেকেই নিয়মিত রাজশাহী এসে ছেলের খোঁজ করছেন বাবা-মা। কিন্তু বারবারই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা। ছেলের খোঁজে ইতোমধ্যে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করেছেন তারা।

ফরহাদের মা ফাহিমা খাতুনের অভিযোগ, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে নগরীর ডিঙ্গাডোবা মোড় থেকে র‌্যাব পরিচয়ে কয়েকজন ফরহাদকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর রাজপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলেও প্রথমে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। দুই মাস পর গত এপ্রিলে পুলিশ জিডি গ্রহণ করেন। এরপর চারমাস পার হলেও এখনো খোঁজ দিতে ব্যর্থ পুলিশ। র‌্যাব অফিসেও কয়েকবার খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু তারা কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেন। ঘটনার পরদিন শুধু বাড়ি এসে একটু তল্লাশি করেছিলো র‌্যাব সদস্যরা। এরপর আর কোনো খোঁজ নেই।

সাধারণ ডায়েরিতে উল্লিখিত তথ্যমতে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে ফরহাদ একটি পুরোনো মোটরসাইকেল নিয়ে ভাটাপাড়ার বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মোটরসাইকেলটি ডিঙ্গডোবা মোড়ের একটি গ্যারেজে রেখে তিনি ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ধরার জন্য মোড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাম লেখা একটি মাইক্রোবাস সেখানে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে চার-পাঁচজন লোক নেমে ফরহাদকে জোর করে তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই স্থানীয় কয়েকজন তার বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানায়। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ফরহাদের খোঁজ নিতে থাকেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন খোঁজ পাননি।

এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, আমি থানায় নতুন জয়েন করেছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না। র‌্যাব ৫-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এএম আশরাফুল ইসলাম বলেন, অনেক আগের ঘটনা তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, বিভাগের কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলে আমরা শৃঙ্খলা কমিটি বিষয়টি তদারক করি। যখন ফরহাদের বিষয়টি শুনি তখন বিভাগীয় সভাপতি এবং আমরা র‌্যাব অফিসে খোঁজ নিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কিছু জানে না বলে জানায়।

পিডিএসও/হেলাল​