ঢাবি প্রতিনিধি

  ০১ নভেম্বর, ২০১৮

‘নদীগুলোকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করলে নদী রক্ষা সম্ভব’

বাংলাদেশের নদীগুলোকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করলে নদী রক্ষা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা। নদী পর্যটন শিল্প উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে আয়োজিত এক সেমিনারে তারা এ মন্তব্য করেন। তারা বলেন, আমাদের দেশের নদীর সৌন্দর্যের কমতি নেই। কিন্তু পরিচর্যার অভাবে তা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হতে পারেনি। নদীগুলোকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করলে নদী রক্ষা সম্ভব।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ সম্মেলন কক্ষে ‘সমৃদ্ধি ও বৈচিত্রে নদী পর্যটন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্লেসমেন্ট অফিস এর আয়োজন করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার।

এতে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান খান কবির, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মল্লিক ফখরুল ইসলাম এবং ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে আরিফ উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক ড. সন্তোষ কুমার দেব। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল কিবরীয়া সেমিনারে নদী পর্যটন বিষয়ক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, আমরা নদীর কোনো সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারছি না। আমাদের কাছে তা নেই। তবে সিজিএস বলেছে, দেশে নদীর সংখ্যা ৪০৫। আমাদের জেলা ও উপজেলার কমিটিগুলো একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর সংখ্যা বের করতে কাজ করছে। এসময় তিনি নৌপর্যটন বিকাশের জন্য নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, নদী পর্যটন নদীর উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত। নদীকেন্দ্রীক পর্যটন ও নদী উন্নয়নের জন্য উচ্চতর গবেষণা প্রয়োজন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে রকম কোনো গবেষণা হয়নি।

মূল প্রবন্ধে মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি, আবহমান জীবনধারা সবকিছুই নদীকেন্দ্রিক। তাই নদী বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। একটি নদীর মৃত্যু মানে শুধু একটি জলধারা নয়, বরং দেশের অর্থনীতির মত্যু, সভ্যতা-সংস্কৃতির স্থবিরতা। কিন্তু এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাব রয়েছে। দুঃখের বিষয় নদীর সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। কেউ নদীর সংখ্যা বলছেন ৫৪০। এর সংখ্যা হয়ত ৮০০ হতে পারে। তবে সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা আশার সঞ্চার করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে বদরুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, গার্মেন্টস শিল্পের পর দেশের অর্থনীতিকে নেতৃত্ব দিচ্ছে পর্যটন শিল্প। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের নদীগুলো হতে পারে পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু। সরকার পর্যটন শিল্পের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। তবে আমাদের সকলকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

সেমিনারে অতিথিরা বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে নদীদূষণের সঙ্গে জড়িত। ঢাকা শহরের সমস্ত বর্জ্য কোনোরকম পরিশোধন ছাড়াই বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা এ বিষয়ে কখনোই কঠোর মনোভাব দেখায়নি। তারা বলেন, নদীকেন্দ্রিক পর্যটন বিকাশে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয় প্রয়োজন। আমরা এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই, যেখানে সকল পর্যটক নিরাপদ বোধ করবে। কিন্তু সবার আগে পর্যটন বিকাশে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।

পিডিএসও/অপূর্ব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নদী,পর্যটন,রক্ষা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close