জবি প্রতিনিধি
অর্থাভাবে জবির পরিবহন সংকট চরমে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিবহন সঙ্কট দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বাস রয়েছে মাত্র ১৬টি। পরিবহনের সংখ্যা বাড়লেও সেগুলো পুরোপুরি দেয়া হয়না শিক্ষার্থীদের। নতুন বাস আসলে তা শিক্ষার্থীদের দেয়ার কথা থাকলেও তা চলে যায় শিক্ষকদের কাছেই।বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় তীব্র পরিবহন সঙ্কটের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অন্যদিকে বাইরের বাসে চড়তে গিয়ে প্রতিনিয়ত নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও কথিত বাস কমিটির সদস্যদের আছে নানা হয়রানি।বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকল হয়ে পড়ে থাকা পরিবহনগুলো সংস্কারে তেমন তৎপরতা নেই প্রশাসনের। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পরিবহন সঙ্কট বেড়েই চলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিস ও রেজিস্টার অফিসের তথ্যানুযায়ী জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ১২টি দোতলা বাস এবং ৪টি একতলা বাস ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের ১৪টি রুটে চলাচল করছে। তার মধ্যে ৪টি একতলা বাস নিজস্ব এবং বাকি ১২টি বাস ভাড়ায় চালিত। প্রতিটি দ্বিতল বাসের ধারণক্ষমতা ১০০ জন। ১৬টি বাসের ধারণক্ষমতা ৩ হাজার। আর বাকি শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই।পর্যাপ্ত বাস না থাকায় এবং ট্রিপের সংখ্যা মাত্র ১ বার হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির মাত্রা অনেক বেশি। বাসের ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী যাতায়াত করায় প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের প্রাণ দিতে হয়। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াত করার সময় দু’জন শিক্ষার্থীকে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়ত করতে হয়। বাসগুলোর একবার ট্রিপ থাকায় সব শিক্ষার্থীর একটি নির্দিষ্ট সময়ে ক্যাম্পাসে আসতে হয়। আবার নির্দিষ্ট সময়ে ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফিরতে হয়। যার ফলে সব শিক্ষার্থী এক সময় চাপের মুখে পড়তে হয়। জানা যায়, প্রতি সেমিস্টারে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে নেয়া হয়। যার মোট অংক অর্ধকোটি টাকার উপরে গিয়ে দাঁড়ায়। তারপরও পরিবহন সঙ্কট দূর হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন-সংগ্রাম করলে তাদের আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখে প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়ার পথেও লোকাল যাত্রী নিয়ে ভাড়া তোলে বলে অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে। শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দেয় পরবর্তীতে অতিরিক্ত লোকাল ট্রিপ থেকে টাকা আদায় করে। চালকরা তাদের ইচ্ছে মত রুট পরিবর্তনও করে। গন্তব্যের আগেই নামিয়ে দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু এই ব্যাপারে প্রশাসনের কোন নজরদারী নেই।এসব বিষয়ে জানতে পরিবহন প্রশাসক সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস সংখ্যা শিক্ষার্থীদের তুলনায় অপ্রতুল। তবে এই সংকট নিরসনের জন্য নতুন ৪টি বাস সংযোগ করার কথা রয়েছে। কিন্তু তার থেকে ৩টি বাস শিক্ষার্থীদের জন্য দেয়া হবে এবং ১টি শিক্ষকদের। যেহেতু বাসের সংখ্যা অনেক কম তাই ডাবল ট্রিপ চালু করার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।অর্থ সঙ্কটে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ করা যাচ্ছে না। চেক পাশ হয়ে না আসলে আমার কিছুই করার থাকে না।’ চালকরা অতিরিক্ত সময়ে গাড়ী চালানোর ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেনা বলে জানান। এই ব্যপারে কোন পদক্ষেপ নেয়ার কথাও তিনি বলেননি।পিডিএসও/রানা