সম্পাদকীয়

  ২০ নভেম্বর, ২০১৮

জাপানের শ্রমবাজার নিয়ে সুখবর

বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি জাপান। কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কঠোর নীতির কারণে বিদেশি শ্রমিকদের জন্য এখানে কাজের সুযোগ খুবই কম। কিন্তু এবার নিজেদের প্রয়োজনে সেই নীতি শিথিল করতে যাচ্ছে জাপান সরকার। প্রয়োজনের তুলনায় স্থানীয় জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় দক্ষ শ্রমিকের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশটিতে। মূলত সে কারণে দেশটির অভিবাসন নীতিতেও আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন।

বিভিন্ন পেশার সাধারণ শ্রমিকরাও যেন তাদের পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে জাপানে থাকতে পারেন, সেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে দেশটির সরকার, যা বাংলাদেশের জন্য একটি অভূতপূর্ব সুযোগ। সফররত আই অ্যাম জাপানের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়োশিহিরো হোতা নিজেও বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক জনশক্তি নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি সুখবর।

জাপানের শ্রমবাজার স্থিতিশীল রাখতে ২০৩০ সাল নাগাদ জাপানে শ্রমিকের দরকার হবে সাত কোটি। তবে তারা বলছে শুধু ৬ কোটি ৪০ লাখ শ্রমিক দেশে পাওয়া যাবে। এর মধ্যে সেবা খাতে ৬০ শতাংশ বা ৪০ লাখ, চিকিৎসা ও কল্যাণ খাতে ১৮ লাখ ৭০ হাজার এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় খাতে ছয় লাখ শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি জাপান সরকার জানিয়েছে, সে দেশের অনুমিত হিসাব অনুযায়ী, অভিবাসন আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনের আওতায় আগামী অর্থবছরে ৪৭ হাজার বিদেশি শ্রমিক জাপানে প্রবেশ করতে পারেন।

গত মঙ্গলবার জাপানের সংসদের অধিবেশনে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন-সংশ্লিষ্ট এমন একটি বিল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। যদি বিলটি পাস হয়, তবে ওই সময়ের মধ্যে ৩৩ থেকে ৪৭ হাজার বিদেশি শ্রমিককে জাপানে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া যাবে। আর ২০১৯ থেকে পরবর্তী ৫ অর্থবছরে ২ লাখ ৬০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার বিদেশি শ্রমিক জাপানে প্রবেশ করতে পারবেন।

ইতোমধ্যে জাপান সরকার অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য ভিসা নিষিদ্ধ করলেও শ্রমিক সংকট কাটাতে স্টুডেন্ট ভিসা এবং ইন্টার্ন ট্রেইনি ভিসার মাধ্যমে অনেককেই কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে শুধু টেকনিক্যাল ইন্টার্ন জাপানে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে গত বছর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং আই অ্যাম জাপানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আমরা আশা করি, এবার বাংলাদেশ থেকেও দক্ষ জনশক্তি জাপানে পাঠানো সম্ভব হবে।

জাপানের শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য বড় সম্ভাবনাময় খাত। জাপানের চাহিদা মূলত দক্ষ শ্রমিকের। সে জন্য আমাদের দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে হবে, ভাষা শিক্ষা দিতে হবে। দেশে অনেক টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে এই উদ্যোগ নেওয়া যায়। মনে রাখতে হবে, জাপানের শ্রমবাজারে একবার সুযোগ করে নিতে পারলে অন্য বাজারে প্রবেশ করা আমাদের জন্য সহজ হবে। তাই, সময়ক্ষেপণ না করে সরকারকে এ বিষয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জাপান,শ্রমবাজার,জাপানের শ্রমবাজার
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close