বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
বালিয়াডাঙ্গী
সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে হবে প্রায় ৬৭ হাজার টন ভুট্টা
ঠাকুরগাঁওয়রে বালিয়াডাঙ্গীতে এবার ভুট্টার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে ভুট্টা চাষ দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উচ্চ ফলনশীল জাত, অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ, কৃষি অফিসের পরামর্শ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ অঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলন আশা করছে কৃষকরা।
বালিয়াডাঙ্গী কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এবার উপজেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ১২ টন। যার মোট উৎপাদন ধরা হয়েছে ৬৬ হাজার ৮৪০ টন।
কৃষকরা জানান, আমন ধান কাটার পর ভুট্টার বীজ বপন করেন তারা। গাছগুলো বেশ বড়ও হয়ে উঠেছে। এখন ভুট্টার খেতগুলোর পরিচর্যা, নিড়ানি এবং সেচ কাজসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ভুট্টা চাষের জন্য সাধারণত ইউরিয়া, পটাশ, ডিএপি, এমওপি, জিপসাম, সালফার ও কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন।
এ ছাড়া বছরে দুবার হাইব্রিড জাতের ভুট্টার চাষ হয়। রবি মৌসুমের ভুট্টা ঘরে তুলতে লাগে ৫ মাস। পরে যে ভুট্টা আবাদ করা হয়, সেটি আড়াই থেকে তিন মাসে পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ভুট্টা পাওয়া যায় ৫৫ থেকে ৬০ মণ। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বলেও জানা যায়।
- কম খরচে বেশি লাভে বালিয়াডাঙ্গীতে ভুট্টা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে
- রবি মৌসুমের ভুট্টা ঘরে তুলতে লাগে ৫ মাস
চাড়োল ইউনিয়নের কৃষক হাবিবর রহমান বলেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে হাইব্রিড পায়োনিয়ার জাতের ভুট্টা লাগিয়েছেন তিনি। প্রতি বিঘাতে খরচ হয়েছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। গতবারের মতো দাম থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হবে তিনি আশা করেন।
অন্যদিকে বড়বাড়ি ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ৪ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মেজর ভুট্টা লাগিয়েছেন। প্রতি বিঘাতে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশা করেন প্রতি বিঘা জমিতে ৪৫ থেকে ৫০ মণ ভুট্টা হবে। গতবারের মতো দাম পেলে প্রতি বিঘা ভুট্টাতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ হবে।
বালিয়াডাঙ্গী কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন, এবার বাজারে ভুট্টার দাম ও চাহিদা ভালো থাকায় উপজেলার কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এবার আমরা কৃষি অফিস থেকে প্রায় ১ হাজার ৫০ জন কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে ২ কেজি উন্নত জাতের ভুট্টা ও সার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি উপসহকারীরা কৃষকদের সবসময় বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছে। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকরা এবার অধিক লাভবান হবে।
পিডিএস/আরডি