reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪

হত্যার দুদিন পর বিজিবি সদস্যের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ

ছবি : সংগৃহীত

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোহাম্মদ রইশুদ্দীনের লাশ দুই দিন পর ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিকতা শেষে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে রইশুদ্দীনের মরদেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত ২২ জানুয়ারি যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলার জেলেপাড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সিপাহি মোহাম্মদ রইশুদ্দীন নিহত হন। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিজিবির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। রইশুদ্দীনের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত এলাকা সাহাপাড়ার শ্যামপুরে।

এদিকে, মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রইশুদ্দীনের গ্রামের বাড়ি শ্যামপুরে গিয়ে দেখা যায়, টিনের একচালা একটি ঘর ও পাশের রান্নাঘরে তালা। শৈত্যপ্রবাহের কারণে দুই শিশুসন্তান (চার বছরের মেয়ে ও চার মাস বয়সী ছেলে) নিয়ে স্ত্রী নাসরিন বেগম উঠেছেন ভাশুরের বাড়িতে। সেখানে গ্রামবাসী এসে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

রইশুদ্দীনের বাবা কামরুজ্জামান জানান, তিন ছেলের মধ্যে সবার ছোট রইশুদ্দীন ছিলেন পরোপকারী। নাতি-নাতনিকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে সরকারের সহায়তা চান তিনি।

অন্যদিকে, রইশুদ্দীনের স্ত্রী নাসরিন ক্ষণে ক্ষণে মূর্ছা যাচ্ছেন। জ্ঞান ফিরতেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছেন, ‘দুইটা অবুঝ বাচ্চা ও আমারে একা ফেলে চলে গেল। তাদের মানুষ করব কীভাবে? ওরে ছাড়া আমি চলব কীভাবে?’

৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল বলেছেন, ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফের কাছে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে।

বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সোমবার ভোর ৫টার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্টসংলগ্ন এলাকায় একদল গরু চোরাকারবারিকে ভারত সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখে বিজিবির টহল দল। এ সময় টহল দলের সদস্যরা তাদের ধাওয়া দিলে দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় টহল দলের সদস্য সিপাহি মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারিদের পেছনে ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দলছুট হয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় জালিয়াপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানায়, সোমবার ভোরে তারা অন্তত ৭-৮ রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন। পরে সকালে সীমান্তের ওপারে এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

তারা বলেন, ধান্যখোলা জালিয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে ভোরে গরু চোরাকারবারিদের ধাওয়া করার সময় বিএসএফের ছোড়া গুলিতে আহত হন মোহাম্মদ রইশুদ্দীন নামের ওই বিজিবি সদস্য। এরপর বিএসএফ সদস্যরা তাকে ভারতের বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিএসএফ,বিজিবি,সীমান্ত,জালিয়াপাড়া
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close