এম বুরহান উদ্দীন, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ)

  ১৯ জুন, ২০২২

শৈলকুপায় যত্রতত্র করাতকল, চরম দুর্ভোগ

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় অনুমোদন ছাড়াই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে করাতকল। কোনো নিয়মনীতি না মেনে এসব অবৈধ করাতকল চলছে বছরের পর বছর। এতে যেমন সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, তেমনি সাবাড় হচ্ছে বনজ, ফলদসহ নানা প্রজাতির গাছ।

এ ছাড়া রাত-দিন সচল থাকায় এসব করাত কলের আশপাশের বাড়িতে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত এসব করাতকল অপসারণ ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অর্ধশত করাতকল রয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই যুগের পর যুগ কল মালিকরা ব্যবসা করে আসছেন। করাতকল চালানোর ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ম-নীতি থাকলেও কেউ মানছে না। বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে সতর্ক করা হলেও এসব করাতকল চলছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ করাতকল সড়কের পাশে অবস্থিত। এর সামনে রয়েছে শত শত গাছের গুঁড়ি। ফলে লোকজন মূল সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করছে। জানা গেছে, এতে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।

উপজেলার বয়ড়া বাজারে অবস্থিত মায়ের দোয়া করাতকলের মালিক মো. রুবেল বলেন, ‘আমরা এখনো লাইসেন্স পাইনি, তবে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। আশা করি, দ্রুত লাইসেন্স পাব।’

উপজেলায় প্রায় ৫০টির বেশি করাতকল রয়েছে, এরমধ্যে পৌর এলাকার হাবিবপুর, কবিরপুর, সিনেমা হলরোড, ফাজিলপুর, চরআউশিয়া ছাড়াও উপজেলার বারইপাড়া, নাদপাড়া, গাড়াগঞ্জ, বসন্তপুর, সাধুহাটি, বরিয়া, কাতলাগাড়ি খুলুমবাড়ি, তমালতলা, কাচেরকোল, কচুয়া, মদনডাংগা, শেখপাড়া, আলমডাংগা, গাড়াখোলা, চড়ইবিল, ভাটই, লাঙ্গলবাঁধ, ধাওড়া, রয়েড়া, বকশীপুর, হাটফাজিলপুর, আবাইপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার-সংলগ্ন ও লোকালয়ে এসব অবৈধ সমিল রয়েছে।

করাতকল স্থাপন বিধিতে বলা হয়েছে, সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটার এবং সরকারি বনভূমির সীমানার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া সকাল ৬টার আগে এবং সন্ধ্যা ৬টার পরে বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে করাত কল চালানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত ফি দেওয়া সাপেক্ষে লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু এসব বিধি-নিষেধ উপেক্ষিত হচ্ছে এসব করাত কলে।

লাইসেন্স না থাকার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করাতকল মালিক জানান, তারা লাইসেন্স ছাড়াই চলতে পারছেন। তাই লাইসেন্স করার দরকার কী। লাইসেন্স পেতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়, তাই এভাবেই চলছেন তারা।

উপজেলা করাতকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ইরাদ আলী বলেন, ‘উপজেলায় অর্ধশত করাত কল রয়েছে, এর মধ্যে ৮ থেকে ১০টির লাইসেন্স আছে।’

শৈলকুপা উপজেলা বন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শৈলকুপাতে কিছু করাতকলের লাইসেন্স থাকলেও বেশির ভাগের নেই। কিছুদিন আগেও অবৈধ কয়েকটি করাতকলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম। প্রয়োজনে আবার অভিযান চালানো হবে।’

শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, ‘ইতোমধ্যে অবৈধ কিছু করাতকলের বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছিন্ন করেছি। আবার অভিযান পরিচালনা করব।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
করাতকল,দুর্ভোগ,শৈলকুপা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close