কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

  ১৯ মার্চ, ২০২২

অবৈধ ট্রলি ও ট্রাক্টরে যানজট কমলগঞ্জে

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় শুষ্ক মৌসুম আসলেই রাস্তায় সবচেয়ে বেশি দেখা মিলে নিষিদ্ধ ট্রলি ট্রাক্টর। উপজেলার ছোট বড় সকল সড়কে এসব যানগুলো দিনের পাশাপাশি মধ্য রাত পর্যন্ত বেপরোয়া ভাবে বেড়াচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত রাস্তায় যানজট, কালো ধোঁয়া শব্দ দূষণ হচ্ছে। এছাড়াও এসব যানবাহনের কারণে গ্রামগঞ্জের কাঁচা-পাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, নিষিদ্ধ ট্রলি ট্রাক্টরের মাধ্যমে ইট, বালু, রড, সিমেন্ট, মাটি গাছসহ বিভিন্ন পণ্য অতিরিক্ত বোঝাই করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এসব নিষিদ্ধ ট্রলি ট্রাক্টরের কারণে বাজারগুলোতে দীর্ঘ যানযট সৃষ্টি হয়। লাইসেন্স, সিগনাল লাইট হর্ণ ছাড়াই এগুলো দাপিয়ে বেড়ায় রাস্তায়। শতভাগ ট্রলি রাতের আঁধারে লাইট ছাড়া টচ লাইটের সাহায্য চলা ফেরা করে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ছোট ছোট দূর্ঘটনা ঘটে। আবার কখনোও কৃষি জমির মাটি বালি মহাল থেকে পলি বালু নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে অনুমোদন ছাড়াই।

মৌলভীবাজার সড়ক জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ট্রলি ট্রাক্টর রাস্তায় চলাচলের কোন অনুমতি নেই। শুষ্ক মৌসুমে স্বল্প খরচে ভারী কাজ করানোর জন্য লোকজন এসব যান ব্যবহার করেন। শুধুমাত্র চাষাবাদের জন্য এগুলো বৈধ থাকলেও এখন অবৈধভাবে পণ্য পরিবহন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

উপজেলার পরিবেশবাদী মো. আহাদ মিয়া বলেন, নিষিদ্ধ যানগুলো বেপরোয়া চলাচলের কারণে শব্দ দূষণ কালো ধোঁয়ায় বায়ু দূষণ হচ্ছে। এছাড়াও একদিকে যেমন গ্রামীণ জনপদের কাঁচা-পাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে প্রতিনিয়ত পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।

রাস্তায় টলি চালানোর বিষয়ে টলি চালক সিপন মিয়া বলেন, আমরা পেটের দায়ে পরিশ্রম করে টলি চালাই, আমরা নিজেরাই হেলপার ছাড়াই পণ্য লোড-আনলোড করি।

উপজেলার ট্রাক মালিক সুয়েল আহমদ আমির আলী ক্ষোভের সাথে জানান, ট্রলি ট্রাক্টরের কারণে প্রতি বছর তাদের লোকসান হয়। বছর ঘুরে মৌসুম আসলেই অতিরিক্ত বডি লাগিয়ে তারা রাস্তায় চলে আসে। ইট, বালি মাটিসহ ইত্যাদি পণ্য কম ভাড়ায় বহন করে। আর লোকজন টাকা বাঁচানোর জন্য ট্রলি ট্রাক্টর ভাড়া করে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। আমরা বছর বছর টাকা খরচ করে গাড়ির লাইসেন্স করি আর তারা সড়ক জনপথের অনুমতি ছাড়াই রাস্তা দাপিয়ে বেড়ায়।

উপজেলার শমশেরনগর এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান রঞ্জু ও স্থায়ী বাসিন্দা আরিফুজ্জামান নুরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, ট্রলি ট্রাক্টর যখন বাজার অতিক্রম করে তখন সারা বাজারে যানজট সৃষ্টি হয়। সকালে বিশেষ করে এসব গাড়ি বেশি দেখা যায়। রাস্তার পাশে স্কুল থাকায় বাচ্চারা রাস্তা পারাপারের সময় অনেক ভয় হয়।

তারা আরও বলেন, বেশির ভাগ ট্রলির ব্রেক নেই, পণ্য নিয়ে বেপরোয়ার মতো রাস্তায় ছুটে। এসব নিষিদ্ধ গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন। এছাড়াও ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় কিশোর বয়সী ছেলেরা গাড়ি চালায়।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশেকুল হক বলেন, এসব টলি ট্রাক্টরের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রয়োজনে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবো।

রাস্তায় অবৈধভাবে টলি ট্রাক্টরে চলাচলের বিষয়ে মৌলভীবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন জানান, এগুলো সড়কে চলাচলের কোন বৈধতা নেই। শুধুমাত্র চাষাবাদের জন্য এগুলো ব্যবহার করা যাবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কমলগঞ্জ,যানজট,অবৈধ ট্রলি ও ট্রাক্টর
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close