নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদীর দেউলিয়া (চারমাথা) কাদিবাড়ী ঘাটের ওপর সেতু তৈরি হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের সময় সংযোগ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি। স্থানীয় সাংসদ নিজ থেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম টাকা দিতে চাওয়ায় জমির মালিকরা তা প্রত্যাখান করেছেন। জমি জটিলতায় সেতুটি কোনো কাজে আসছে না।

উপজেলার ছোট যমুনা নদীর ওপর দেউলিয়া (চারমাথা) কাদিবাড়ী ঘাটে প্রায় ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটির প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি ২১ লাখ ২৭৭ টাকা। কাজটি করেছে নওগাঁ শহরের ‘ইথেন-পিএমপিএল জয়েন ভেঞ্চার’ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রায় ছয়মাস আগে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু সেতুর পূর্বপাশে প্রায় ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট (এক বিঘা ৫ কাঠা) জমি জটিতলায় সংযোগ সড়কটির কাজ থেমে আছে।

সেতুর পূর্বপাশ থেকে দেউলিয়া মোড় পর্যন্ত সরকারি সরু রাস্তা আছে। রাস্তাটি অনেকটাই বাঁকা। আবার রাস্তা প্রশস্ত করতে হলে রাস্তার দুইপাশে ব্যক্তিমালিকানা পাঁচজনের জমির ওপর পড়বে। সেতু নির্মাণের বরাদ্দ দেয়া হলেও রাস্তা নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। রাস্তার কোনো বরাদ্দ না থাকায় সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার নিজ থেকে এক বিঘা ৫ কাঠা জমির জন্য মালিকদের ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু বাজারমূল্য অনেক কম হওয়ায় জমির মালিকরা আগ্রহ দেখাননি। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধান করে রাস্তা নির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন নদীর দুইপাড়ের বাসিন্দারা।

জমির মালিক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে জরিপ করা হয়েছে সেতু থেকে দেউলিয়া মোড় পর্যন্ত। কয়েকজন মালিকের প্রায় এক বিঘা ৫ কাঠা জমি পড়েছে। সেখানে আমারও ৫ কাঠা জমি আছে। বর্তমানে জমির মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা বিঘা। কিন্তু সাংসদ সেলিম উদ্দিন তরফদার আমাদের মোট জমির ওপর ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছেন। আমরা সরকারি মূল্যে জমি দিতে চাই। আর এ কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে আছে।

সেতুর পাশে চা দোকানদার বকুল হোসেন বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে সেতু তৈরি হয়েছে। কিন্তু পূর্বপাশে সেতুতে উঠার রাস্তা তৈরি করা হয়নি। অনেকে উঁচু সেতুতে মোটরসাইকেল নিয়ে উঠতে গিয়ে উল্টে পড়ে যায়। আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। প্রতিদিনই এমন দুর্ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে ইথেন-পিএমপিএল জয়েন ভেঞ্চারের ঠিকাদার ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল বলেন, সেতুর কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু পূর্বপাশে জমি জটিলতায় এপ্রোচ সড়কের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার। তবে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সমস্যা নেই।

বদলগাছী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ওই সেতুর জন্য ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপ্রোজালের (ডিপিপি) সময় এপ্রোচ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের জন্য কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি। সেতুর পূর্বপাশে সরকারি যে রাস্তা আছে, তার ওপর দিয়েই রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করতে হলে কিছু ব্যক্তিগত জমির ওপরও যাবে। এ বিষয়টি নিয়ে সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া ঠিকাদার অন্য জায়গায় কাজ করছেন। সেখানে কাজ শেষ হলেই ওই সেতুর সংযোগ কাজ দ্রুত শুরু করবেন।

পিডিএসও/এমকে