নোয়াখালী প্রতিনিধি

  ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

সুবর্ণচরে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার রায় পিছিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার রায় পিছিয়েছে। রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছে আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টায় নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করে বিচারক।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলো- সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্যম ব্যাগ্যা গ্রামের মো. সোহেল, মো. হানিফ, স্বপন, মো. চৌধুরী, ইব্রাহীম খলিল বেচু, মো. বাদশা আলম বসু, আবুল হোসেন আবু, মো. মোশারফ, মো. সালাউদ্দিন, মো. রুহুল আমিন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. হাসান আলী বুলু, মো. মুরাদ, মো. জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি ও মো. সোহেল। এ মামলার আরেক আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল পলাতক রয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। তার অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান বলেন, ওই ঘটনার পরদিন নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তিনি বলেন, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। আসামিপক্ষের পাঁচজন সাফাই সাক্ষী প্রদান করে। কোনো সাক্ষীই ভোটকেন্দ্রে পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেনি। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মো. মিন্টু ওরফে হেলাল নামে একজন আসামি ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।

নির্যাতনের শিকার নারী বলেন, ‘আমি ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অপরাধে সেই দিন আওয়ামী লীগের রুহুল আমিন মেম্বার ও তার লোকজন আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। আমি সেই নির্যাতনের ঘটনা কিছুতেই মন থেকে মুছতে পারছি না। সারাক্ষণ নির্যাতনের দৃশ্য আমার চোখে ভাসে। আদালতের কাছে আমি ন্যায়বিচার চাই। এছাড়া আমার চাওয়ার কিছু নেই।’

আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রছুল মামুন বলেন, ‘সুবর্ণচরে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনার মামলায় কারাগারে রয়েছে ১৫ জন আসামি। তাদের মধ্যে আট আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ভুক্তভোগী নারী ন্যায়বিচার পাবেন বলে আমরা আশাবাদী।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close