আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরাদ্দের অর্ধেকের কম বস্তা নিচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা
আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ঈদের বিশেষ বরাদ্দ (ভিজিএফ) গম বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রত্যেক সুবিধাভোগীকে সোয়া ১৩ কেজি গম দেওয়ার কথা থাকলে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭-৮ কেজি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরাই স্বীকার করেছেন। যদিও চেয়ারম্যান এবং প্রভাবশালীদের ভয়ে সুবিধাভোগীরা কোনো কথা বলতে পারছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জন্য মোট ৪৭৩ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা রবি ও সোমবার বিতরণ করে ইউনিয়ন পরিষদ। রোববার সন্ধ্যায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের কিছু সদস্য ২-৩ বস্তা করে গম নিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় ৪, ৫ ও ৬নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য মোসা. জাহানারা বেগমকে গম পাচারের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোনো সঠিক জবাব দিতে পারেননি। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান বাদল বলেন, কয়েকটি ইতিমখানার জন্য কয়েক বস্তা গম দেওয়া হয়েছে। যদিও কোনো এতিমখানায় এ গম বিতরণ করার সুযোগ নেই।
চাওড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য মো. সফেজ উদ্দীন প্যাদা বলেন, ‘আমাদের তালিকাভুক্ত যে নাম আছে সে পরিমাণ গম চেয়ারম্যান সাহেব বরাদ্দ দেননি। যার কারণে ৯-১০ কেজি করে বিতরণ করতে হয়েছে।’ ১, ২ ও ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্যের স্বামী (নারী সদস্য উপস্থিত ছিলেন না) আলম ঘরামী বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের যে গম দিয়েছেন তাতে আমরা ৭-৮ কেজির বেশি দিতে পারিনি। কি পরিমাণ গম বরাদ্দ হয়েছে, তা কোনো সদস্য জানেন না।
এ বিষয়ে জানতে সোমবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান খান বাদলের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। এদিকে ভিজিএফ বিতরণে চাওড়া ইউনিয়নের মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু গত রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, গম বিতরণের বিষয়টি আদৌ তিনি জানেন না।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন, এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দ, এ জায়গায় কেউ অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
"