সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
তাড়াশ ও গুরুদাসপুর
সড়ক সংস্কারে অনিয়ম, দুই উপজেলাবাসীর ভোগান্তি
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও নাটোরের গুরুদাসপুর মৈত্রী সড়কের মাঝখানে উপকরণসামগ্রী ফেলে রেখে মেরামতের কাজ করা হচ্ছে। এতে ওই পথে যাতায়াত করতে দুর্ভোগ সহ সড়কের কাজ দায়সারাভাবে করা হচ্ছে অভিযোগ দুই উপজেলার বাসিন্দাদের। সাদা পাথরের সঙ্গে কালো পাথরের মিশ্রনের অভিযোগ স্বীকার করেছেন ঠিকাদার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তাড়াশ-গুরুদাসপুর মৈত্রী সড়কের কুন্দইল সেতুর ঢালুতে সড়কের মাঝখানে পাথর, বালু, সিমেন্ট, মিক্সার মেশিন রেখে দেওয়া হয়েছে। কামারশন গ্রামের পাশের সড়কের মাঝে পাথর ঢেলে রাখা হয়েছে। সড়কের এসব জায়গা দিয়ে চলাচলের সময় অধিকাংশ যানবাহন পাথরে আটকে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে যাত্রী সাধারণ গাড়ি থেকে নেমে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি পার করে দিচ্ছেন। কুন্দইল সেতুর পূর্ব পাশের ঢালুতে কালো পাথরের সঙ্গে সাদা পাথর মিশিয়ে মেরামত কাজ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, চুক্তি মোতাবেক সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের মে মাসে। চট্টগ্রামের ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের চুক্তি হয়। পরে জেলা নওগাঁর ইথিলা এন্টার প্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি কিনে নেয়। এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রাসেল আহমেদ কাজটি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. অহিদুল ইসলাম গোকুলের কাছে বেচে দেন।
কুন্দইল গ্রামের অটোচালক খালেক, হবিবর, আলিম, বক্কর ব্যাটারিচালিত অটোচালক সোরহাব, মজিদ বলেন, কুন্দইল সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। পাথর, বালু ও সিমেন্ট সড়কের মাঝে ফেলে রাখা হয়েছে। মেরামত কাজের মেশিন সড়কে রেখে উপকরণ সামগ্রী মেশানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ সড়কে যাতায়াতের সময় কিছু গাড়ি উল্টে গেছে। সড়কের মাঝ থেকে উপকরণ সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিত করার দাবি ভুক্তভোগীদের।
এদিকে স্থানীয়রা ওই সড়ক মেরামত কাজে অনিয়মের অভিযোগ করে জানায়, মেরামত কাজে কালো পাথরের সঙ্গে সাদা পাথর মেশানো হচ্ছে। পাথর ও সিমেন্ট কম রেখে পরিমাণে বালি বেশি মেশানো হচ্ছে। ঢালাই কাজের শেষে ঢালায়ের ওপর পানির ব্যবহার কম রয়েছে। ঢালাই শুকাতেই সড়কের কোনো কোনো স্থানে চিকন ফাটল দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া ধীরগতিতে মেরামত কাজ করা হচ্ছে। চলতি মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা।
ঠিকাদার ও বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. অহিদুল ইসলাম গকুল সড়ক মেরামত কাজে ধীরগতির কথা স্বীকার করে বলেন, তিন গাড়ি সাদা পাথর মেরামত কাজের শুরুর দিকে দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে কালো পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। পাথর, বালি ও সিমেন্ট হিসেব অনুযায়ী মেশানো হচ্ছে। তবে পানির ব্যবহারে কিছু কম রয়েছে।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজুলল হক জানান, গুরুদাসপুর-তাড়াশ মৈত্রী সড়কের মেরামত কাজ নির্ধারিত সময়ে শুরু করার জন্য ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রভিষণে সড়কের বাইরে নির্মাণসামগ্রী রেখে কাজ করার ব্যয়ভার ধরা নেই।
"