ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) ও রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ফটিকছড়ি ও রামু

হাজারো ট্রাকে ফসলি জমির মাটি ইটভাটায়

* কৃষকদের স্বল্পমূল্যে জমির উর্বর মাটি কিনে ইটভাটায় বেশি মূল্যে বিক্রি * ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি ক্রয়-বিক্রয় করলে জানে না প্রশাসন * অভিযান অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রশাসনের

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও কক্সবাজারের রামুর বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিধি হাজারেরা ড্রাম ট্রাক, ট্রাকে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়। কৃষকদের স্বল্পমূল্যে জমির উর্বর মাটি কিনে ইটভাটায় বেশি মূল্যে বিক্রি করছেন অসাধু মাটি ব্যবসায়ী। এতে জমির উর্বর শক্তি নষ্ট হয়ে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

ফটিকছড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান ও ট্রাকে করে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে আমন ধান কাটার পরপরই ফসলি জমির মাটি বিক্রি শুরু হয়। নিচু জায়গা ভরাট করা ও ইট তৈরিসহ বিভিন্ন কাজের জন্য চলছে ওই ফসলি জমির মাটি বেচাকেনা।

পাঁচ পুকুরিয়া গ্রামের কৃৃষক জানে আলম বলেন, মাটি ব্যবসায়ীর কাছে এক একর জমির উপরিভাগের দুই থেকে আড়াই ফুট মাটি সাড়ে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।

ফটিকছড়ি উপজেলার কাজিরহাটে মাটি বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী আবু তালেব মিয়া বলেন, কৃষকের থেকে পতিত জমির মাটি কিনে তা ভাটায় সরবরাহ করা হয়।

ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, অসাধু ব্যবসায়ী ও জমির মালিক অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের জন্য কৃষকের থেকে মাটি কিনে জমির উর্বরশক্তি নষ্ট করছে।

ফটিকছড়ি ইউএনও মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, কৃষি বিভাগকে এ ধরনের মাটি বিক্রি বন্ধের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি ক্রয়-বিক্রি করলে তা প্রশাসন জানে না।

এদিকে রামু প্রতিনিধি জানান, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মিনি পিকাপ বা ট্রাকে করে দৈনিক হাজারের অধিক গাড়ি মাটি কেঁটে ধ্বংস করা হচ্ছে ফসলি জমি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রামু উপজেলার পাঞ্জেগানা স্টেশন থেকে দুই কিলোমিটার ভেতরে ফসলী জমির মাটি স্কাভেটর দিয়ে কাঁটা হচ্ছে। একই চিত্র দেখা গেছে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলি জমিতেও। ইউনিয়নের মাঝের পাড়া, ঘোনার পাড়া বিলগুলোর ফসলি জমি থেকে মাটি কাঁটা হচ্ছে।

পাঞ্জেগানা এলাকার ফসলি জমির মাটি কে কাঁটছেন জানতে চাইলে সেখানে

থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিনি পিকাপ চালক জানান, ফয়েজ মেম্বার এখানকার মাটি কাঁটছেন।

অন্যদিকে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের পাশে গর্জনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বোমাংকিল ও রাজঘাটে ফসলি জমির মাটি কেঁটে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহরান চৌধুরী মারুফের বিরুদ্ধে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে শাহরান চৌধুরী মারুফের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ ছাড়া অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফয়েজ মেম্বারের মোবাইল ফোনে নম্বরে একাধিকবার সংযোগের চেষ্টা করা হলে তিনিও ফোন ধরেননি।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপম মজুমদার জানান, সম্প্রতি কাউয়ারখোপে অভিযান করে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান চলমান আছে, অব্যাহত থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close