মো. শাহ আলম, খুলনা

  ০৮ এপ্রিল, ২০২৪

খুলনার বাজারে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা

খুলনার ঈদের বাজার এখন সরগরম। চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে পা ফেলারও জায়গা নেই। সাপ্তাহিক এবং লাইলাতুল কদরের ছুটির কারণে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে খুলনার মধ্যবিত্তের বাজার হিসেবে পরিচিত ডাকবাংলো নিক্সন মার্কেটে। পছন্দের পোশাক কিনতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে বেড়িয়েছেন ক্রেতারা। তবে উচ্চবিত্তের নিউমার্কেট, দামি শপিংমলগুলোয় ক্রেতার ভিড় তুলনামূলক কম।

গতকাল রবিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের প্রতিটি মার্কেট ও বিপণিবিতানে ছিল ঈদের আমেজ। সবখানেই ক্রেতাদের সরব উপস্থিতি। মার্কেটগুলোয় তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

শহরের মানুষদের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চল থেকে ক্রেতারা আসছেন মার্কেটে। ইফতারের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে দোকানগুলোয়। বিশেষ করে কাপড়ের দোকানগুলোয় ভিড় বেশি। পাশাপাশি জুতা, কসমেটিকস, পাঞ্জাবি, প্যান্টের দোকানসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকানেও রয়েছে আলাদা ভিড়।

দোকানিরা জানান, এবারের ঈদে পাকিস্তানি ও ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের থ্রি-পিস বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি থ্রি-পিস সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, ভারতীয় ব্র্যান্ড ৪ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং ভারতীয় বুটিকসের পোশাক ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানি আগানূর থ্রি-পিস, সাদাবাহার, মারিয়াবী ও ভারতের আলিয়া কাট, নায়রা কুর্তি ইত্যাদি।

খুলনা বিপণিকেন্দ্র দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মাসুম ও খুলনা শপিং কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান জানান, এ বছর দেরিতে মার্কেট জমেছে। শুক্র ও শনিবার ছুটি থাকায় ভালো কেনাবেচার প্রত্যাশা করছেন তারা।

নগরীর ডাকবাংলো মোড় থেকে ভৈরব নদ, রেলস্টেশন থেকে সদর থানা পর্যন্ত এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় রয়েছে ১৭টি মার্কেট। দোকান রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। পুরো ডাকবাংলো এলাকাই মধ্যবিত্তের বাজার হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেনাবেচা হয় ডাকবাংলো নিক্সন মার্কেটে।

ডাকবাংলো এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। ফুটপাত ও সড়ক দখল করে নতুন দোকান বসানো হয়েছে। এতে হাঁটার পথ সংকুচিত হয়ে গেছে। হেঁটে মার্কেটে প্রবেশ করতেই বেগ পেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। প্রতিটি দোকানই ক্রেতায় ঠাঁসা। ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত দোকানিরা কথা বলার ফুরসত পাচ্ছেন না।

পাঞ্জাবি বিতানের কর্মচারী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর ১২-১৫ রোজার পর থেকেই কেনাকাটা জমে ওঠে। কিন্তু এ বছর ২০-২২ রমজান পর্যন্ত তেমন ক্রেতা ছিল না। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ক্রেতা আসতে শুরু করেছে। চাঁদরাত পর্যন্ত বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা করছি।

বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা সুলতান হোসেন বাড়ির ছোটদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছেন। ভিড় ও গরমে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে। এ বছর পোশাকের দাম বাড়তি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ডাকবাংলো মোড়ের সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা গেছে উচ্চবিত্তের নিউমার্কেটে। সেখানে অধিকাংশ দোকান দেখা গেছে ক্রেতাশূন্য। নগরীর শিববাড়ী মোড়ের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমেও ক্রেতার উপস্থিতি ছিল কিছুটা কম।

নিউমার্কেটের খুলনা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সেলিম তারিক জানান, গরমের কারণে দিনের বেলা ক্রেতা কম থাকে। রাতে ভিড় বাড়ে। তবে অন্যান্য বছর এ সময় ভিড় বেশি হলেও এ বছর ক্রেতা কিছুটা কম।

খুলনার নিউ মার্কেটে পোশাক কিনতে আসা নেসাউন নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, ঈদে সবাই পাকিস্তানি আগানূর থ্রি-পিস বেশি নিচ্ছে। যেগুলোর দাম ২ হাজার, ৩ হাজার, ৪ হাজার টাকা। এর থেকে বেশি দামেও রয়েছে।

ফাতেমা’স ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী ফাতেমা আফরোজ বলেন, এবারের ঈদে মেয়েদের পাকিস্তানি আগানূর থ্রি-পিসের প্রতি ঝোঁক একটু বেশি। এ ছাড়া দেশি কিছু ব্র্যান্ড আছে যেগুলো ভালো চলছে। এবারের ঈদে বিক্রি ভালোই হচ্ছে। দিনের তুলনায় রাতে বিক্রি বেশি হয়, যা চলে মাঝ রাত পর্যন্ত। গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে আরামদায়ক পোশাকে নজর রাখছেন পুরুষরা। বিক্রেতারাও নিয়ে এসেছেন আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাক। তবে এক্ষেত্রে এবারের ঈদেও পুরুষের পছন্দ সুতির পাঞ্জাবি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close