দুর্দান্ত স্পেনের বিপক্ষে নড়বড়ে জার্মানির মুখোমুখি লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে ছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। হতাশ হতে হয়নি তাদের। অসাধারণ এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা দুই পরাশক্তি। হারলেই খাদের কিনারায়, এমন সমীকরণের ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ১-১ সমতায় ম্যাচ শেষ করেছে জার্মানি। কাতারের আল বায়াত স্টেডিয়ামে আলভারো মোরাতার গোলে এগিয়ে যায় স্পেন, ম্যাচ শেষ হওয়ার ৮ মিনিট আগে সমতা ফেরান নিকলাস ফুল্করুগ।

তবে স্পেনের জন্য ম্যাচটি না জিতলেও খুব বেশি ক্ষতি হতো না, কিন্তু হারলে খাদের কিনারে চলে যেত জার্মানি। ড্র করে নকআউট পর্বে যাওয়ার আশা বেঁচে থাকল হানসি ফ্লিকের দলের।

ম্যাচের শুরু থেকে শেষ মিনিট পর্যন্ত ছিল টানটান উত্তেজনা। বসে থেকে খেলা দেখার উপায় ছিল না দর্শকদের। স্পেনের দৃষ্টিনন্দন পাসিং ফুটবলের বিপরীতে গতিশীল ফুটবল খেলতে থাকে জার্মানি। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে গোল করার সহজ একটি সুযোগ মিস করে স্পেনের ফেরান তোরেস।

জার্মানির রুডিগার বল স্পেনের জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয় সেটি। এ ছাড়া দুই দলই আরো কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করে।

দ্বিতীয়ার্ধের একই ধারার ফুটবল খেলতে থাকে দুই দল। দারুণ খেলেও গোলের সামনে এসেই যেন খেই হারিয়ে ফেলছিলেন উভয় দলের খেলোয়াড়রাই। অবশেষে ৬২ মিনিটে আর ভুল করেননি আলভারো মোরাতা, বদলি হিসেবে নামা মোরাতাই জর্দি আলবার নিচু ক্রসে পা ছুঁইয়ে ম্যানুয়াল নয়ারকে পরাজিত করেন। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্পেন।

হেরে গেলেই প্রায় বিদায়, এমন অবস্থায় জেগে ওঠে জার্মানি। স্পেনের বলের দখল থেকে যখনই বল পেয়েছে জার্মানরা, দারুণ ক্ষিপ্রতা এবং গতি নিয়ে আক্রমণে উঠেছে তারা। এর ফলাফলই পায় তারা ৮৩ মিনিটে ফল্করাগের গোলে। ১-১ সমতা থাকার পরে উভয় দলই ম্যাচ জয়ের সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু কোনোটিই কাজে লাগাতে পারেনি তারা।

ম্যাচে বল দখলের ক্ষেত্রে জার্মানি পাত্তা পায়নি স্পেনের কাছে, লুইস এনরিকের শিষ্যরা ৬৫% সময় বল পায়ে রেখে চোখ জুড়ানো ফুটবল উপহার দেন। অন্যদিকে সুযোগ পেলেই আক্রমণে ওঠা জার্মানরা গোলের প্রচেষ্টায় এগিয়ে ছিল, তাদের ১১ শটের বিপরীতে স্পেনের শট ছিল ৭টি।

এই ড্রর ফলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষেই রইল স্পেন। নিজেদের শেষ ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে ড্র করলেই নকআউট নিশ্চিত হবে স্পেনের, এমনকি হারলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় স্পেনের সুযোগ থাকবে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার।

অন্যদিকে ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তলানিতে থাকা জার্মানির কোস্টারিকাকে তো হারাতে হবেই, সঙ্গে প্রার্থনা করতে হবে স্পেন যেন জাপানের বিপক্ষে না হারে।

এসব সমীকরণ মিললেই শুধু নকআউটে উঠতে পারবে জার্মানরা। তা ছাড়া টানা দ্বিতীয়বারের মতো গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হবে মুলার-নয়ারদের।

"