আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১১ জুন, ২০১৮

জর্ডানের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে বৈঠক

আয়কর বাড়ানোর প্রতিবাদে জর্ডানে শুরু হওয়া বিক্ষোভ থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে আঞ্চলিক নেতাদের বৈঠক ডেকেছে সৌদি আরব। গতকাল রোববার সৌদি যুবরাজ ও বাদশাহের সঙ্গে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, কুয়েতের আমির ও আবুধাবির যুবরাজের। বৈঠকে জর্ডানকে সহায়তা দেওয়া নিয়ে আলোচনার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন নেতারা। বিদেশি সাহায্যনির্ভর দেশ জর্ডানের অর্থনৈতিক সংকটের জন্য রাষ্ট্রীয় ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে।

বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন সৌদি বাদশাহ সালমান, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আর আহমাদ আল সাবাহ ও আবু ধাবির শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। শনিবার সৌদি রাজ দরবার থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জর্ডান যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জর্ডানের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে বিদেশি সাহায্যনির্ভর। গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল থেকে দেশটি বার্ষিক ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের কর্মসূচিভিত্তিক সহায়তা পায়। জর্ডানের রাজধানী আম্মানভিত্তিক সাংবাদিক দাউদ কুতাব আলজাজিরাকে বলেছেন, জর্ডানকে বেশির ভাগ সহায়তা দেয় আরব দেশগুলো। বর্তমানে এর পরিমাণ কমে এসেছে, না হয় সরাসরি নির্দিষ্ট কর্মসূচিতে দেওয়া হয়। এসব সাহায্য দেশটির বাজেটে কোনো সহায়তা করে না।

তিনি বলেন, এই ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য আছে। একপক্ষ বলে উপসাগরীয় দেশগুলো সরাসরি টাকা দেওয়ার চেয়ে শুধু স্কুল ভবন আর রাস্তা বানানোর কর্মসূচিতে টাকা দেয়। আবার কেউ কেউ ভাবে সরাসরি অর্থ সাহায্য বন্ধের পেছনে রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। দাউদ কুতাব বলেন, ঘটনা হলো জর্ডান অর্থসাহায্যের খরায় ভুগছে। তিনি বলেন, ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদ আল-আকসা রক্ষায় ভূমিকা রাখায় জর্ডানকে সহায়তা দেওয়া আরব দেশগুলোর দায়িত্ব বলে মনে করে আম্মান। চলতি সপ্তাহের শুরুতে রাজধানী আম্মানসহ কয়েকটি প্রদেশে আয়কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে কর আইনে সংস্কারের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। ২০১৬ সালে আইএমএফের কাছ থেকে ৭২৩ মিলিয়ন ডলারের ঋণ নেয় জর্ডান। তিন বছর মেয়াদে ঋণের পরিমাণ সীমিত করার শর্তে এই ঋণ নেয় দেশটি।

ঋণ সংশ্লিষ্ট বাধ্যবাধকতার জন্য দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে মূল্যবৃদ্ধি পায়। তেল আর রুটির দাম বাড়ায় তৈরি হয় অসন্তোষ। ২০১৮ সালেই দেশটিতে পাঁচবার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুৎ বিল।

ব্যাপক বিক্ষোভের কারণে এই সপ্তাহের শুরুতে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হানি আল মুলকি। পদত্যাগের সময় তিনি দেশের অর্থনীতির কাঠামোবদ্ধ সমস্যাকে দায়ী করেন। আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা, বিদেশি সাহায্যনির্ভরতা ও সাড়ে ছয় লাখ সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়াকে এ সমস্যার কারণ হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি। জর্ডানের জাতীয় ঋণের পরিমাণ ১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন, যা দেশটির জিডিপির ৯৫ শতাংশ। আর মুলকির পদত্যাগের পর জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ শিক্ষামন্ত্রী ওমর আল-রাজাজকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার আল-রাজাজ বিতর্কিত কর আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও ঋণ সংকটের কোনো সমাধান হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist