আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২০ মে, ২০১৮

যৌন কেলেঙ্কারি : চিলিতে সব বিশপের পদত্যাগ

শিশুদের যৌন নিপীড়ন এবং তা ধামাচাপা দেওয়ার কেলেঙ্কারির জেরে চিলির ৩৪ জন রোমান ক্যাথলিক বিশপের সবাই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ক্যাথলিক সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের কাছে। এমনকি তারা ভুক্তভোগী ও চার্চের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তাদের ‘গুরুতর ভুল এবং সত্য’ গোপন করার জন্য।

টানা তিন দিনের আলোচনা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশপ লুই ফারনান্দো রামোস পেরেজ এবং হুয়ান ইগনাসিও গোনজালেজ এরাজুরিজ।

তবে পোপ ফ্রান্সিস বিশপদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন কিনা, তা এখনো জানা যায়নি। কোনো দেশের উচ্চ পর্যায়ের খ্রিস্টান ধর্মগুরুরা একসঙ্গে পদত্যাগ করতে চাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। যৌন নির্যাতনকারী এক যাজকের পক্ষে সাফাই দেওয়া এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত চিলির এক ধর্মগুরুকে তিন বছর আগে বিশপের পদমর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে ব্যাপক সমালোচিত হন পোপ ফ্রান্সিস। গত জানুয়ারিতে পোপ দুঃখ করে বলেন, এই কেলেঙ্কারির কারণে কষ্ট আর লজ্জায় পড়েছেন তিনি। পোপের এই বক্তব্যে নড়ে ওঠে চিলির ক্যাথলিক চার্চ। এই ঘটনার কেন্দ্রে বিশপ হুয়ান বারোস। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্যাথলিক চার্চে নিজের পদমর্যাদাকে ব্যবহার করে তিনি তার গুরু ক্যাথলিক যাজক ফারনান্দো কারাদিমার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের একটি চলমান তদন্ত বন্ধ করেছিলেন। ফাদার কারাদিমা ছিলেন খুবই প্রভাবশালী একজন যাজক। ভ্যাটিকানের তদন্তে ১৯৭০ ও ৮০’র দশকে কমবয়সী ছেলেদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং তাকে আজীবন ‘প্রায়শ্চিত্ত ও প্রার্থনা’র শাস্তি দেওয়া হয়। অনেক পুরনো ঘটনা হওয়ায় ফাদার কারাদিমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

হুয়ান বারোসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সম্পর্কে জানার পরও তাকে বিশপ হিসেবে নিয়োগ দেন পোপ ফ্রান্সিস। কারণ হিসেবে বলেন, হুয়ান বারোস নিজে যৌন নিপীড়নে যুক্ত ছিলেন না।

অভিযোগ ও সমালোচনার মুখে গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার পদত্যাগ করার চেষ্টা করেছেন বিশপ বারোস। কিন্তু প্রতিবারই তার পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। পোপের দৃষ্টিতে বিশপ বারোস ছিলেন নির্দোষ।

এমনকি জানুয়ারিতে চিলি সফরের সময় বিশপ বারোসের পক্ষে পোপ বলেন, সত্য প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে ‘অপবাদ’ আখ্যা দেওয়া উচিত। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যেদিন তারা বিশপ বারোসের বিরুদ্ধে আমাকে প্রমাণ এনে দেখাবে, সেদিন আমি এ ব্যাপারে বলব। তার বিরুদ্ধে একটা প্রমাণও নেই। এগুলো সব অপবাদ। বুঝতে পেরেছেন?’ তখনই পোপ ফ্রান্সিসের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

এর কিছুদিন পরই পোপ যৌন নিপীড়নের শিকারদের নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে আঘাত করার কারণে দুঃখপ্রকাশ করেন। জানুয়ারির শেষদিকে তিনিই ভ্যাটিকানের যৌন নির্যাতনবিষয়ক সর্বোচ্চ বিশেষজ্ঞকে চিলি পাঠান বিষয়টি তদন্ত করার জন্য। তদন্তে উঠে আসে বিশপ বারোসের সম্পৃক্ততার বিষয়টি।

এবার বিশপ হুয়ান বারোস পদত্যাগ করতে চাইলে পোপ তা গ্রহণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist