এস এইচ এম তরিকুল
রাসিক নির্বাচন
প্রধান ৬ সমস্যা নিয়ে ফের প্রচারণায় প্রার্থীরা
প্রতিবারই নির্বাচনের আগে যেসব সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীরা প্রচারণা চালান, তেমন ছয়টি সমস্যা চিহ্নিত করে আবারও মাঠে নেমেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
সমস্যগুলো হচ্ছেÑ বসত বাড়িতে গ্যাস সংযোগ, ভাঙাচোরা সড়ক, জলাবদ্ধতা, মাদক, হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানো। প্রতি নির্বাচনেই এসব সমস্যা সমাধানে প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন হয়নি আজও। একইসঙ্গে বেকার সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতিও প্রদান করা হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিতদের। তবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন নগরবাসী।
ভোটাররা বলছেন, মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ বেশির ভাগ রাস্তা ভাঙাচোরা। অনেক ওয়ার্ডে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা খুবই নাজুক। মাত্র কয়েক মিনিটের ভারী বৃষ্টিতেই তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। আর কোনো কোনো এলাকায় জলাবদ্ধতা থাকে সারা বছরই। যে সমস্যায় ভোগান্তিতে থাকেন নগরীর লক্ষীপুর বাগানপাড়াস্থ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি)-এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সংলগ্ন বাকির মোড় থেকে ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজি (আইএইচটি) রাস্তার মহল্লাবাসী। এ ছাড়া মাদকের ভয়াবহ বিস্তারে উদ্বিগ্ন নগরবাসী। অনেকের মতে, রাজশাহী মহানগরীতে মশার উপদ্রব, পুকুর ভরাট এবং মাদকের বিস্তার ঘটেছে ব্যাপক। মহল্লায়-মহল্লায় মাদকের অবাধ কেনাবেচা ও অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবার নামে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলছে অরাজকতা। গণশৌচাগারের সমস্যাও প্রকট। ফুটপাত এখন সরকার দলীয় ব্যবসায়ীদের দখলে। অত্যাধিক অটোরিকশার কারণে যানজট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বাড়ছে বেকার সমস্যা। যে কারণে এবার ভোটের মাধ্যমে আগামী দিনে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে চায় নগরবাসী।
এবারও এসব সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। কিন্তু ভোটাররা বলছেন, তারা চিন্তাভাবনা করেই ভোট দেবেন। তবে স্বাধীনভাবে ভোট প্রয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে নগরীতে।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান গতকাল রোববার রাতে প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, মশা নিধন, ফুটপাত দখল মুক্ত করা, অতিরিক্ত অটোরিকশার চলাচল নিয়ন্ত্রণ, পুকুর ভরাট বন্ধকরণ, রাস্তা সংস্করণ, বেওয়ারিশ কুকুর নিধন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ডাস্টবিন, অপরিকল্পিত ডিভাইডার, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, সিগন্যাল বাতি চালু করাসহ নগরীর বিভিন্ন অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত সিটি করপোরেশন। মহানগরীর উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, যোগাযোগ ও নাগরিকসেবার নিশ্চিত করতে পূর্বের মেয়রকে বারংবার বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তাগিদ দিয়েছে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ।
গতকাল রোববার রাতে প্রতিদিনের সংবাদকে রাজশাহীর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিয়ার জানান, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ নাই। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, বর্তমানে রাসিকের আয়তন ৯৭.১৮ বর্গ কিলোমিটার। ৩০টি ওয়ার্ড ও ১৩৪টি মহল্লাজুড়ে বিস্তৃত এই মহানগরীর অধিকাংশ সড়কই বেহাল। ২০১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী ৪১৮টি হোল্ডিংয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন ৪ লাখ ৯০ হাজার ৩২২ জন। তবে অস্থায়ীভাবে আরো ৪ লাখ মানুষ বসবাস করলেও ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ ও ৩০ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
"