আদালত প্রতিবেদক
বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে রাজউককে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন ভাঙার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। নির্ধারিত দিনে যথাযথভাবে মুচলেকা না দেওয়ায় বিজিএমইএকে ফের মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, (বিজিএমইএ) ভবন ভাঙতে যদি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিতে না পারে তা হলে রাজউককে প্রস্তুত থাকার জন্য বলেছেন আদালত। গত মঙ্গলবার বিজিএমইএ আর সময় চাইবে না এ-সংক্রান্ত মুচলেকা দিতে বলে সর্বোচ্চ আদালত। ওই দিনই শেষ বারের মতো এক বছরের সময় চেয়ে লিখিত মুচলেকা দেন বিজিএমইএ। তবে লিখিত মুচলেকায় বলা হয়, এরপর আমরা আর সময় চাইব না। গত ৫ মার্চ বহুতল ভবনটি ভাঙতে আরো এক বছর সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।
ভবন ভাঙতে একাধিকবার সময় নিয়েছে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত বছরের ৮ অক্টোবর সাত মাস সময় দেয় আপিল বিভাগ। আগামী মে মাসে সেই সময় শেষ হবে। তার আগেই সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করে পোশক শিল্প নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানটি।
১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করেন সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে এটি বিজিএমইএর প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএর ভবন ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে বিজিএমইএকে নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি ভাঙতে বলা হয়। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল, সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে আদালত বলেন, ভবনটির সৌন্দর্য ও মহিমান্বিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো। এই ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট করা না হলে এটা শুধু হাতিরঝিল নয়, গোটা ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে।
রায়ে আদালত বলেন, বিজিএমইএ যাদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাটের অংশ বিক্রি করেছে, তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। দাবি করার এক বছরের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয় রায়ে।
"