reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ মার্চ, ২০২৪

বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক

কার্যকর ও দক্ষ বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা ছাড়া কৃষিকে লাভজনক বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর করা বেশ কঠিন। তাই কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা অপরিহার্য। জাতীয় কৃষি নীতিমালা-২০১৮ সালে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে লাভজনক কৃষি খাত নিশ্চিতকরণে কৃষকের দর-কষাকষির সামর্থ্য বড়ানোসহ কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার সুযোগ তৈরি করতে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কথা। ওই নীতিমালা বা পদক্ষেপগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে কৃষিপণ্যের সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠবে- এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়।

অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এক বছর ধরেই বেশ চাপে রয়েছে সরকার। তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারার কারণে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছিলেন অনেকেই। তবে দায়িত্ব পেয়ে দপ্তরে আসার প্রথম দিনই ভোক্তাবান্ধব দ্রব্যমূল্য নিশ্চিত করতে ‘স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনার’ একগুচ্ছ পরিকল্পনা সামনে এনেছিলেন নতুন সরকারের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ পদ্ধতি চালু, প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে অগ্রাধিকারমূলক চুক্তি, পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় ডিজিটাল নজরদারি, সরকারিভাবে টিসিবির মাধ্যমে রেশনিং পদ্ধতি চালু করাসহ অন্যান্য উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথাও তিনি বলেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা করতে চাই। উৎপাদক বা আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সরবরাহের টাইমটা যেন আমরা কমিয়ে আনতে পারি। সরবরাহ ভালো থাকলে বাজারে কেউ কারসাজি করতে পারবে না। কোনো ভয়ভীতি দেখিয়ে নয়; সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই আমরা দ্রবমূল্যটা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। তেল, চিনি, লবণ, কৃষিপণ্য, ডাল- এসব নিয়ে যারা কাজ করে তারা যেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সঙ্গে কাজ করে সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’

ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি, স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। একই সঙ্গে নিত্যপণ্যের বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীর অস্তিত্ব বিলীন করারও উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ বাজার অস্থির করার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করে এই মধ্যস্বত্বভোগীরা। তাদের দৌরাত্ম্যেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। অনৈতিক মুনাফার আশায় সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে বাজারে পণ্যের সংকট তৈরি করে তারা। এতে কষ্ট বাড়ে ভোক্তার, বিব্রত হয় সরকার। এমন পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে নিত্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনায় অনলাইন পদ্ধতি চালু করার কথা ভাবছে সরকার। এই কাজের জন্য নতুন অ্যাপ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীদের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ভাউচার সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ মিশনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে এরই মধ্যে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

ডলার সংকটের কারণে এলসি জটিলতায় বাজারে নিত্যপণ্যের সংকট রয়েছে। অনেক সময় উৎপাদনের ঘাটতি, পণ্যের সহজলভ্যতা নেই- এমন নানা কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এতে বাজারে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠে সাধারণ মানুষের। এই অবস্থা থেকে মুক্তির উপায় হলো প্রকৃত তথ্যভিত্তিক বাজার ব্যবস্থাপনা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগ। স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটা দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা চাই বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close