reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ মার্চ, ২০২৪

এনআইডি সংশোধনে দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধ হোক

দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড। কিন্তু অনেক কার্ডে তথ্য ভুল থাকায় বা কার্ড হারিয়ে গেলে সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরিচয়পত্রের ভুলে অনেকের চাকরি হয় না, কেউ বেতন বা পেনশন পান না, কেউ ব্যাংকে লেনদেন করতে পারেন না। কারো বা পাসপোর্ট ও ভিসা করতে অসুবিধা হয়। এমনকি পরিচয়পত্রে ভুল থাকায় অনেক হতদরিদ্র ভিজিএফসহ বিভিন্ন ত্রাণ পর্যন্ত নিতে পারেন না। পরিচয়পত্র-সংক্রান্ত এমন অসংখ্য সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর এ চিত্র প্রতিদিনকার।

জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে নানা ধরনের ভুল উঠে এসেছে বারবার। লাখ লাখ মানুষের এনআইডিতে রয়েছে নিজের নামে ভুল, কারো বাবা-মায়ের নাম, কারো ঠিকানা বা কারো জন্মণ্ডসাল ভুল। আবার দেখা গেছে, কারো বাবার নামের স্থলে স্বামীর নাম ছাপা হয়েছে। এসব ভুল সংশোধনেও কেটে যাচ্ছে বছরের পর বছর। জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে বা ভুল হলে সংশোধন করতে গ্রাহককে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ঘুরতে ঘুরতে মাথার ঘাম পায়ে পড়ে। তবু পরিচয়পত্র হাতে পান না গ্রাহকরা। দফায় দফায় পোহাতে হয় ভোগান্তি। একসময় বৈধপথে ব্যর্থ হয়ে জেনে-বুঝেই অনেককে দালালের দ্বারস্থ হতে হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনলাইন ও অফলাইনে সক্রিয় অসংখ্য দালাল চক্র। আর এসব চক্রের মাধ্যমে নাগরিকদের সুরক্ষিত তথ্য চলে যাচ্ছে অলিগলির দোকানে, পড়ছে বেহাত হওয়ার ঝুঁকিতেও। অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচন অফিসের কিছু অসাধু কর্মীর সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে দালাল চক্রের। তাদের মাধ্যমে নির্বাচন অফিস থেকে সার্ভার কপি সংগ্রহ করেন চক্রের সদস্যরা। সার্ভার কপিতে একজন নাগরিকের সংশ্লিষ্ট সব ধরনের তথ্য থাকে। সার্ভার কপি নির্দিষ্ট সফটওয়্যারে অথবা অ্যাপসের মাধ্যমে ইনপুট (প্রবেশ করিয়ে) করে হুবহু জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়। যার বারকোড যাচাই করলেও সংশ্লিষ্ট নাগরিকের সব তথ্য পাওয়া যায়। এভাবেই নাগরিকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চলে যায় দালাল চক্রের হাতে।

ভোটার তালিকা হালনাগাদে প্রতিবারই তথ্য সংগ্রহের সময় উভয় পক্ষের গাফিলতির কারণে তথ্যের গরমিল থাকছে। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা, সচেতন নজরদারি ও মাঠপর্যায়ের অনিয়ম পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। এনআইডি এখন জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। ভুলত্রুটি সংশোধনের সহজ সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে বর্তমান লোকবল দিয়ে নির্ধারিত সময়ে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া সম্ভব কি না তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

সর্বোপরি নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে হবে। ভোগান্তির কারণেই বাধ্য হয়ে অসদুপায় অবলম্বন করেন নাগরিকরা। এনআইডি জটিলতা নিয়ে ভোগান্তি ও আর্থিক দুভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হন নাগরিকরা। আর তার সুযোগ নেয় কমিশনের অসাধু কর্মী ও দালাল চক্র। ফলে এতে করে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যও ঝুঁকিতে পড়ে যায়। কমিশনের উচিত এদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়া। জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন সরাসরি জড়িত। অতএব একে সুরক্ষায় কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তৎপর হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close