reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ মার্চ, ২০২৪

পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা হোক

প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেই বেড়েছে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম। রমজানে তদারকি বেশি থাকার কারণে আগেই দাম বাড়িয়ে বাজার থেকে টাকা তুলে নেয় অসাধু ব্যবসায়ীরা। তবে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের তৎপরতাও আছে। তা সত্ত্বেও লাগাম টানা যাচ্ছে না পণ্যের দামের।

রোজায় অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য চারটি কারণ চিহ্নিত করেছেন ব্যবসায়ীরা। সেগুলো হলো- ডলার সংকট ও এর বাড়তি দাম, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট এবং উচ্চ শুল্ক। নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। সে জন্য পণ্য আমদানিতে খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া পরিবহনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদাবাজির কারণে সবজি থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। সিন্ডিকেটের কারণে কমছে না কিছু পণ্যের দাম। এ ছাড়া উচ্চশুল্কের কারণে আকাশচুম্বী হয়েছে কিছু পণ্যের দাম। পরিবহনে চাঁদাবাজি যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশজুড়ে সড়কে চাঁদাবাজির মচ্ছব চলছে। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানা গেছে। কিন্তু পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন বিষয়টি চিহ্নিত করে সরকারের কাছে বারবার এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ও চাঁদাবাজির বিষয়ে অবহিত। তারাও তা বন্ধ করা হবে বলে বারবার আশ্বাস দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সচিব সভায়ও পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি শক্ত হাতে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর বিভিন্ন স্থানে র‌্যাবের অভিযানে চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই চাঁদাবাজি বিভিন্ন কৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশুমার চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রমজানের আগেই বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে জোর দিতে হবে পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধের বিষয়ে।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেশজুড়ে পরিবহনে চাঁদাবাজির এই চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিবহনে চাঁদাবাজি চলছে। রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ, পরিবহন নেতারাও এ চাঁদাবাজি টিকিয়ে রেখেছেন। সড়ক পরিবহন খাতে দিনে ১১ কোটি টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন মালিকদের সঙ্গে আঁতাত করে দিনে ১১ লাখ গাড়ি থেকে ১১ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে। সে হিসাবে বছরে সড়কে ৪ হাজার ১৫ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, ঢাকাসহ সারা দেশে নিত্যপণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণ পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও খাদ্যের মুদ্রাস্ফীতি সবচেয়ে বেশি। তার অন্যতম কারণ পণ্য পরিবহনে বিভিন্নভাবে চাঁদা আদায়। পণ্য পরিবহনের চাঁদাবাজি বন্ধ করা গেলে পণ্যমূল্য অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করি আমরা।

পণ্য পরিবহন কিংবা ওঠানো-নামানোর সময় কোথাও চাঁদাবাজি হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। অন্যদিকে, রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে ‘লাগাম টানা’ সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেছেন, ‘রমজান মাসে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে থাকবে এবং বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’ আমারও তাই মনে করি, যেভাবেই হোক নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে সংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া পরিবহনে চাঁদাবাজি ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close