ফরিদপুর প্রতিনিধি

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪

স্যুটকেসে লাশ

টাকা নিয়ে তর্কে মিলনকে হত্যা যৌনকর্মী রোজিনার

ফরিদপুর বাস টার্মিনালে লাগেজের মধ্যে যুবকের মরদেহ ফেলে রেখে যায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা। ঘটনার দুদিন পর ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত ও হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। দৌলতদিয়া পতিতা পল্লীতে টাকা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে তাকে হত্যা করা হয়। অভিযান চালিয়ে মিলন প্রামাণিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত যৌনকর্মী রোজিনা আক্তার কাজলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোজিনাকে গ্রেপ্তার করার এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ফরিদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাহউদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদী ও ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামীম হাসান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুজন বিশ্বাস। এসআই মোহাম্মদ শামীম সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযানের বর্ণনা দেন।

গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গোল্ডেন লাইন বাস কাউন্টারের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে ছাই রঙের লাগেজ (স্যুটকেস) তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিষয়টি এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ স্যুটকেসের তালা ভেঙে মাথা, হাত ও পা গুটানো অবস্থায় একটি লাশ উদ্ধার করে। পরে জানা যায়, লাশটি মিলন প্রামাণিকের (৩৯)। তিনি পাবনা সদরের নতুন গোহাইবাড়ি মহল্লার কাশের প্রামাণিকের ছেলে। তিনি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দঘাট এলাকায় ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বোরকা পরিহিত এক নারী একটি মাহিন্দ্রতে (তিন চাকার গাড়ি) করে ওই স্যুটকেস নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে আসেন। তিনি ঢাকাগামী বিকাশ পরিবহনের একটি বাসের টিকিট কাটেন। স্যুটকেসটি বেশি ভারী হওয়ায় ওই নারীর টিকিটের দাম ৩০০ টাকার জায়গায় ৬০০ টাকা নেওয়া হয়। তখন ওই নারী বলেছিলেন- স্যুটকেসে এসি ও লোহার যন্ত্রাংশ থাকায় ভারী হয়েছে। বাসটি সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে ছাড়ার সময় ওই নারীকে খুঁজে না পাওয়ায় তার স্যুটকেসটি ওই বৈদ্যুতিক খুঁটির সামনে রেখে যান কাউন্টারের লোকজন।

অভিযানে অংশ নেওয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাহউদ্দিন জানান, নিহত মিলন বিবাহিত এবং তার একটি মেয়ে আছে। মিলন গোয়ালন্দে একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। গোয়ালন্দে থাকা অবস্থায় দৌলতদিয়া যৌনপল্লী নিবাসী রোজিনার সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। বিভিন্ন সময়ে রোজিনা তাকে তিন থেকে চার লাখ টাকা ধার দেন। দীর্ঘদিন ধরে এ টাকা পরিশোধ না করায় তার সঙ্গে রোজিনার সম্পর্কের অবনতি হয়। গত শুক্রবার রাতে মিলন রোজিনার ঘরে যান। তিনি রোজিনাকে পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে রোজিনা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মিলনকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close